জ্যাক কেরুয়াক
১২ মে ২০১২‘অন দ্য রোড'-কে বলা হয় বিট জেনারেশনের অন্যতম প্রামাণ্য উপন্যাস৷ ১৯৫১ সালের এপ্রিল মাসে মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে এই এক লাখ পঁচিশ হাজার শব্দের উপন্যাসটি শেষ করেন ২৯-বছর-বয়সী কেরুয়াক৷ প্রেরণা যা'ই হোক, ইন্ধন বলতে ছিল শুধু কাপের পর কাপ কফি৷
১২০ ফুট লম্বা একটি ট্রেসিং পেপারের রোলকে সাইজ করে কেটে তার ওপর টাইপ করতে শুরু করেন কেরুয়াক, পরে পাতাগুলো আবার জোড়া দিয়ে দেন৷ ভাবগ্রস্তের মতো টাইপ করে গেছেন, মার্জিন, অনুচ্ছেদ, অধ্যায়, কিছুই রাখেননি৷ তাঁর বন্ধু এবং যাত্রাসঙ্গি নিল কাসাডি'র একটি চিঠি থেকেই নাকি কেরুয়াকের বিশ্বখ্যাত উপন্যাসের সূত্রপাত৷ দুজনের ভবঘুরে বাউন্ডুলেপনার দিনগুলো কেরুয়াক ধরে রেখেছেন তাঁর উপন্যাসের পাতায়৷
৩৬ মিটার লম্বা সেই পাণ্ডুলিপির প্রথম ন'মিটার যাচ্ছে এবার প্যারিসের চিঠিপত্র ও পাণ্ডুলিপি মিউজিয়ামে, তিন মাসের প্রদর্শনীর জন্য৷ সেইসঙ্গে কান'এ মহরত হবে ঐ উপন্যাসের ভিত্তিতে ব্রাজিলিয়ান চিত্রপরিচালক ওয়াল্টার সালেস'এর তৈরী সর্বাধুনিক ছবিটির৷ উপন্যাসটির এর আগেও চিত্ররূপ দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এবার তা করেছেন ‘দ্য মোটরসাইকেল ডাইরিজ'-এর নির্মাতা সালেস৷ ‘মোটরসাইকেল ডাইরিজ'-এর উপজীব্য হল তরুণ চে গুয়েভারা'র লাতিন অ্যামেরিকা ভ্রমণ৷
কেরুয়াকের হারানো নাটক
১৯৫৭ সালে কেরুয়াকের ‘অন দ্য রোড' উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়৷ ঠিক সে'বছরেই কেরুয়াক তাঁর একমাত্র পূর্ণ দৈর্ঘ্যের নাটক লেখেন৷ তিন অঙ্কের নাটক৷ নাম ‘বিট জেনারেশন'৷ নাটকের উপজীব্য হল কেরুয়াক স্বয়ং এবং নিল কাসাডি ও অ্যালেন জিন্সবার্গ'এর মতো অপরাপর বিট পোয়েট ও বিট জীবন৷
কেরুয়াক নাটকটি মঞ্চস্থ করারও চেষ্টা করেছিলেন, এমনকি মার্লন ব্র্যান্ডো'র দ্বারস্থ হয়েছিলেন৷ কিন্তু কোনো লাভ হয়নি৷ শেষমেষ তিনি সব প্রচেষ্টা ত্যাগ করেন৷ ১৯৬৯ সালে পরলোকগমন করেন জ্যাক কেরুয়াক৷ আশ্চর্যের কথা, সেই হারানো নাটকের পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া যায় ২০০৫ সালে, একটি গুদামে৷
এবার কেরুয়াকের নিজের শহর লোওয়েল এবং ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় মিলে সেই হারানো নাটক প্রথমবারের মতো মঞ্চস্থ করতে চলেছে৷ উপলক্ষ হল জ্যাক কেরুয়াক সাহিত্য উৎসব ২০১২৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (এএপপি, এপি)
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম