অভিষেকের লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের দু'কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের বিরুদ্ধে আরো কড়া পদক্ষেপ নিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাদের অস্থাবর সম্পত্তি আগেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এবার তাদের একটি অ্যাকাউন্টের দু'কোটি ৭০ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আদালতকে গোটা বিষয়টি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে ইডি।
ইডি-র অফিসারদের বক্তব্য, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু ওই অ্যাকাউন্টটি দেখভাল করতেন। লিপস অ্যান্ড বাউন্ড সংস্থায় ডিরেক্টর পদে চাকরি করতেন তিনি। পরবর্তীকালে ওই সংস্থাতেই সিওও পদে নিয়োগ হয়েছিল তার। এদিকে এই সংস্থাতেই সিইও হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর একারণে তাকে কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখেও পড়তে হয়েছে। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কাগজ জমা দিতে হয়েছে কেন্দ্রীয় অফিসারদের কাছে।
তৃণমূলের দাবি, অভিষেক এখন আর লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, অভিষেক এখনো ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে শুরু থেকেই এই সংস্থাটির দিকে বিশেষ নজর রেখেছে ইডি এবং সিবিআই। অভিষেকের মায়ের অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের প্রায় সাত কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, এই সংস্থার মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির টাকা নয়-ছয় করা হতো। সেই সূত্রেই কালীঘাটের কাকুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে কেন্দ্রীয় অফিসাররা গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার আদালতে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিল করেছে ইডি। সেখানেই নতুন এই অ্যাকাউন্টটির উল্লেখ করা হয়েছে। ইডি জানিয়েছে, এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি টাকা নয়-ছয় করা হতো। কালীঘাটের কাকুর তত্ত্বাবধানে এই অ্যাকাউন্টটি চলতো।
বস্তুত, কলকাতা হাইকোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সমস্ত তথ্য আদালতকে দিতে হবে। সংস্থার ছয়জন ডিরেক্টরের নাম, তাদের যাবতীয় সম্পত্তির হিসেব, লেনদেনের নথি, সংস্থার উপভোক্তাদের নাম, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অভিষেকের বিস্তারিত সম্পত্তির নথি, তার মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত নথি, সংস্থার সমস্ত কর্মীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি দাখিল করতে বলেছিল আদালত। অভিষেক নিজে সেই নথি জমা দিয়েছিলেন ইডি-র কাছে। তবে অভিষেক এখনো এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কি না, তা নিয়ে নতুন করে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)