অর্গানিক পণ্য
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪কোনো প্যাকেটের লেবেলে ‘অর্গানিক' শব্দটি থাকলে ভোক্তারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, ভেতরের পণ্যটি পরিবেশবান্ধব কোনো কৃষিখামার থেকে এসেছে৷ ‘‘অর্গানিক, ইকোলজিক্যাল বা জৈব লেবেলের একটা সুবিধা হলো এই শব্দটি আইনত নির্ধারিত,'' বলেন জার্মান ভোক্তাসুরক্ষা সংস্থা ফুডওয়াচ-এর আন্ড্রেয়াস ভিংকলার৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘প্যাকেটের ওপরে জৈব লেখা থাকলে ভেতরেও কমপক্ষে বায়ো মানের জিনিস থাকবে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত থাকতে পারি৷ এটা লঙ্ঘিত হয়েছে বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি৷''
পরস্পরবিরোধী প্রবণতা
জার্মানিতে জৈব পণ্যের প্রতি একটা পরস্পরবিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়৷ একদিকে গত দশকে এর চাহিদা হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে৷ জৈব খাদ্যদ্রব্য বিক্রির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে জার্মানি৷ যার আর্থিক পরিমাণ সাত বিলিয়ন ইউরো৷ এই দিক দিয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পরিণত হয়েছে জার্মানি৷ বলেন কৃষি ও খাদ্যের ফেডারেল এজেন্সির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টোফ আইডেন৷
‘অর্গানিক' – কথাটি শুনলে মনে হবে স্বাস্থ্যকর জীবন৷ ইউরোপীয় জৈব লেবেল নিশ্চয়তা দেয় যে, এতে রাসায়নিক কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয়নি৷ পশুখাদ্যে জিন পরিবর্তন করা উদ্ভিদ মেশানো হয়নি৷ সংযোজিত বস্তুর পরিমাণও সীমিত৷ গতানুগতিক খাদ্যে যেখানে ৩২০ সংযোজিত বস্তু অনুমোদিত৷ সেখানে জৈবখাদ্যে এই রকম পদার্থ থাকে ৫০টিরও কম৷
পরিবেশবান্ধব চাষ হয় যে জমিতে
অন্যদিকে জৈবপদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রসার খুব একটা চোখে পড়ার মতো নয় জার্মানিতে৷ ১০০-এর মধ্যে মাত্র সাতটি কৃষিজমিতে পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ হয়৷ সব মিলিয়ে ২০ হাজার কৃষিখামারে জৈবিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ হয়৷ এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কৃষকের সংখ্যাও কিছুটা নিম্নমুখী৷ ভোক্তাদের চাহিদা সত্ত্বেও নিজেদের আর্থিক লাভের দিকটিও দেখতে হয় তাঁদের৷
জমির ইজারার হার, উৎপাদনের খরচ ইত্যাদি খুব বেশি৷ জৈব খাদ্যদ্রব্যের দাম অতিরিক্ত হলে ভোক্তারাও হাত প্রসারিত করতে চান না৷ অন্যদিকে অনিয়মের জন্য প্রায়ই জার্মান জৈবখামারগুলি খবরের শিরোনাম হচ্ছে৷ যেমন পশুখাদ্য আনা হয়েছে এমন সব দেশ থেকে, যা ইউরোপীয় মানসম্মত নয়৷
জার্মানিতে বেশ আদৃত
৭০টি জাতীয় অর্গানিক বা জৈব লেবেল ইউরোপীয় মানের সমপর্যায়ের বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে বায়ো কৃষিখামারগুলি সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছে কিনা৷
উৎপত্তি যেখানেই হোক না কেন জৈব লেবেল জার্মানিতে বেশ আদৃত৷ জার্মানি ও ইউরোপীয় জৈব লেবেল অনেকটা সমমানের৷ অবশ্য ফুডওয়াচ এত ধরনের সার্টিফিকেটের সমালোচনা করে৷
ভোক্তারা এত বেশি লেবেল দেখে অনেকটা দিশাহারা হয়ে যান, বুঝে উঠতে পারেন না কোনটা সিরিয়াস আর কোনটাই বা বিজ্ঞাপনের চমক৷ ভোজ্যপণ্যের শিল্পকারখানাগুলি নিজেদের ‘ইমেজ' বাড়ানোর জন্য অনেক সময় এই ধরনের লেবেল লাগিয়ে থাকে৷ যেমন ‘প্রিমিয়াম' বা ‘প্রজাতি উপযোগী কৃষিখামার' ইত্যাদি৷
ফুডওয়াচের দাবি, এক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট চিহ্ন থাকতে হবে৷ যেখানে খাদ্যের পুষ্টিগত মান, উৎপত্তি, জিনপ্রযুক্তির প্রয়োগ ইত্যাদির উল্লেখ থাকবে৷