অর্থ রোজগারের অভিনব উপায়
সারা বিশ্বেই পড়েছে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব৷ জার্মানিও এর বাইরে নয়৷ চাকরি পাওয়া কঠিন হলেও মানুষের চাহিদা বাড়ছে দিনদিন৷ তাই কেউ কেউ রোজগারের জন্য বিভিন্ন উপায় বেছে নিচ্ছেন৷
হাতে তৈরি জিনিস
আজকের দিনে পড়াশোনা শেষ করে সাথে সাথে পছন্দমতো চাকরি পাওয়া রীতিমতো ভাগ্যের ব্যাপার৷ তথ্য-প্রযুক্তির যুগে এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের চাহিদাও কম নয়৷ তাছাড়া জন্মদিন বা বড়দিনের মতো নানা উপলক্ষ্য তো আছেই৷ অর্থাৎ চাই বাড়তি খরচের জন্য বাড়তি রোজগার৷ তবে কারো সৃজনশীল কাজের প্রতি আগ্রহ থাকলে তাদের জন্য রোজগার তেমন কোনো সমস্যা নয়৷
তুলতুলে সুন্দর হাঁস
পাঁচ বছর আগে ভিনসেন্ট ব্যার্টেল তাঁর কয়েকজন ছাত্র বন্ধুকে নিয়ে কোলনে একটি প্রকল্প তৈরি করেন৷ লক্ষ্য ছিল, নতুন কিছু তৈরি করা যাতে অর্থ এবং আনন্দ দুটোই হয়৷ যেমন ভাবা তেমনি কাজ৷ শুরু করেন তুলতুলে নরম কাপড় থেকে নানা আকারের এবং রং-এর হাঁস তৈরি করতে৷ এগুলি দেখতে অসম্ভব সুন্দর এবং আদুরেও বটে!
গরম হাঁস
অবাক হলেও সত্য যে, এই হাঁস মাইক্রোওয়েভ বা হিটারে গরম করে শরীরের কাছে ধরে রাখলে গরম বোধ হয়, এনে দেয় উষ্ণতা৷ কোলনের স্টাটগার্ডেনের বড়দিনের বাজারে নতুন ধরণের এই পণ্য প্রচুর বিক্রি হয়েছে৷ এতে ব্যার্টেল নিজে এবং তাঁর বন্ধুরা সবাই খুব খুশি৷ দোকান ভাড়া দেয়ার পরও যথেষ্ট লাভ হয়েছে সৃজনশীল এই তরুণ দলের৷
অনলাইনে বিক্রি
বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষ্যে বসা বিশেষ বাজারগুলোতে বিক্রি ছাড়াও, অনলাইনেও বিক্রি করা হয় এই গরম হাঁস৷ ব্যার্টেল বলেন, এই ব্যবসায় কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও আমি আমার আনন্দ নষ্ট করতে চাই না৷ সখের ব্যবসা হিসেবে এটা খুবই ভালো এবং আমি এ জীবনে যত কাজ করেছি, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে৷
হাতে তৈরি গয়না
কোলনের গয়না ডিজাইনার ফেটোল ডোগান গ্রঞ্চল মাত্র বছর তিনেক আগে থেকে গয়না তৈরি শুরু করেন৷ তাঁর তৈরি গয়নায় রয়েছে তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী ডিজাইন৷ প্রথমে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বিক্রি শুরু করছিলেন তিনি৷ ফেটোল বলেন, ‘‘যে গয়নাগুলোর বেশি চাহিদা দেখেছি, পরেরদিন ভোর ছটায় ঘুম থেকে উঠে সেগুলোই তৈরি করে নিয়ে গেছি বাজারে৷ আমার তৈরি গয়না অন্য গয়নার চেয়ে একেবারেই আলাদা৷ তাই ঝটপট বিক্রি হয়ে যায়৷’’
ভিন্ন ধরণের পণ্য
স্টাটগার্ডেনের দোকানগুলোর দায়িত্বে ছিলেন লাউরা ফন ভেল্ক, তাঁর ভাষায়, ‘‘গরম হাঁস বা গয়নার মতো পুরোপুরি ভিন্ন ধরণের সৃজনশীল হাতে তৈরি এই পণ্যগুলো, যা সহজেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়৷’’
কোলের শিশু নিয়ে আয়
সিলভিয়ার সন্তানের বয়স মাত্র কয়েক মাস৷ ছোট্ট বেবির দেখাশোনা করার পাশাপাশি সে খানিকটা অবসর পায়৷ আর এই সামান্য সময়টুকুই সে কাজে লাগায় ছোট-খাটো ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করে৷ পরে সেগুলি সিলভিয়া বিক্রি করে অনলাইনে৷ এরই মধ্যে কয়েকবার অর্ডারও পেয়েছে সে৷ সখ, টাকা, মানুষের সাথে যোগাযোগ – সবই হচ্ছে ঘরে বসেই৷ সিলভিয়ার মতে, ‘‘ইচ্ছে থাকলেই উপায় বের করা যায়৷’’