1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যাসিড আক্রমণের প্রতিকার

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৪ জুলাই ২০১৩

ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে মেয়েদের ওপর অ্যাসিড হামলা বেড়ে চলা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের তাতে হেলদোল না থাকায়, সুপ্রীম কোর্ট কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেন সরকারকে৷ অথচ এরপরেও সরকার জাতীয় নীতিমালা রচনার কোনো উদ্যোগ নেয়নি৷

https://p.dw.com/p/197Gz
Hasina, a survivor of an acid attack, takes part in an awareness rally about the violence against women as they mark International Women's Day in Dhaka March 8, 2012. REUTERS/Andrew Biraj (BANGLADESH - Tags: SOCIETY ANNIVERSARY)
ছবি: Reuters

মহিলাদের ওপর অ্যাসিড হামলার প্রতিকারে গোটা দেশে অ্যাসিড বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অ্যাসিড-আক্রান্তদের পুনর্বাসনে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে পরামর্শ করে একটা সহমতে আসার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাতে ভ্রুক্ষেপ না করায় বিষয়টি সম্পর্কে কঠোর মনোভাব নিয়েছে আদালত৷ বলা হয়েছে, সরকার এক সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় নীতিমালার খসড়া দাখিল না করলে বা কোনো ব্যবস্থা না নিলে সুপ্রিম কোর্ট একতরফাভাবেই সারা দেশে অ্যাসিড বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবে৷

অ্যাসিড হামলা উপ-মহাদেশে মহামারির আকার নিতে চলেছে৷ গ্রাম-শহরে ভেদহীনভাবে মেয়েরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি৷ কার্যত, প্রতি সপ্তাহেই এই ধরণের ঘটনা ঘটছে৷ এদের মধ্যে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি মেয়ে হলো প্রায় ৭০ শতাংশ৷ লিঙ্গ বৈষম্যের এ এক জঘন্য দিক৷ এই কয়েকদিন আগেই দিল্লির এক তরুণী নার্স প্রীতি মারা যান অ্যাসিড আক্রমণে মুম্বই-এ৷

Supreme Court of India, Quelle: Wikipedia/LegalEagle - licensed under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 License // http://en.wikipedia.org/wiki/File:Supreme_court_of_india.JPG //
ভারতের সুপ্রীম কোর্ট (ফাইল ফটো)ছবি: CC-BY-SA-3.0 LegalEagle

অ্যাসিড আক্রান্ত তরুণী লক্ষী এবং সেবা সংগঠনগুলির মতে, অ্যাসিড হামলা বৃদ্ধি পাবার মূল কারণ দেশে অ্যাসিড জলের মতোই সহজলভ্য৷ নাইট্রিক এবং সালফিউরিক অ্যাসিডের একটি বোতল মাত্র ৩০ টাকা দিয়ে সহজেই কেনা যায় পাড়ার হার্ডওয়্যারের দোকানে৷ তাই সক্রিয়বাদীরা ‘নন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল' অ্যাসিড বিক্রি নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়৷ কেউ কেউ আবার সুপারিশ করেন, অ্যাসিড বিক্রেতাদের লাইসেন্স থাকতে হবে এবং কিনতে হলে ক্রেতাকে তাঁর পরিচয়-পত্রের সঙ্গে জানাতে হবে কী কাজে এই মারাত্মক কেমিক্যাল তাঁর দরকার৷

অ্যাসিড বিক্রি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অ্যাসিড-আক্রমণকারীকে গ্রেপ্তার, দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে৷ এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের মানসিকতার সংস্কার জরুরি, যাতে তাঁরা ধর্ষণ ও অ্যাসিড হামলাকে সমগোত্রের অপরাধ বলে গণ্য করে৷

এ বছরে যে নতুন আইন পাশ করা হয়েছে, তাতে অপরাধীর শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে৷ তাতে ৮ থেকে ১০ বছর জেল হতে পারে৷ কিন্তু আক্রান্তের পুনর্বাসন, যেমন মেডিক্যাল, আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক সমস্যা সমাধানের উপযুক্ত সংস্থান নেই তাতে৷

উল্লেখ্য, ভারতের মতো বাংলাদেশেও অ্যাসিড নিক্ষেপ একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা৷ ১৯৯৯ সালে মোট ৩,০০০টি অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশে৷ কিন্তু ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার দুটি আইন পাশ করে৷ অ্যাসিড আমদানি এবং খোলা বাজারে তা বিক্রি নিয়ন্ত্রিত করে৷ পরিণামে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ২০০২ সালের ৪৯৬ থেকে কমে গত বছর হয় মাত্র ৯৮টি৷

এই সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে না পারাটা সরকারের পক্ষে লজ্জাকর এবং বৃহত্তর সমাজের অ-সংবেদনশীলতার এক প্রতিফলন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য