কী হবে ঈদের পরে?
১০ আগস্ট ২০১৩শুক্রবার ঈদের দিনেও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল আশঙ্কা৷ তাই যারা ঈদগায় নামাজ পড়তে গেছেন, তাঁদের প্রধান চাওয়া ছিল দেশের রাজনৈতিক সংকট যেন কেটে যায়৷ দেশ যেন মুক্ত হয় সংঘাত-সংঘর্ষের হাত থেকে৷
সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আবারও সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে তাঁরা নির্বাচনে যাবেন না৷ আর হতেও দেবেন না৷ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যদি নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়, তাহলে তাঁরা কোনো আন্দোলন করবেন না৷ অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করবেন৷
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় সবাইকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন৷ তিনি আবারো বলেছেন, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী৷ কোন অযৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবেনা৷ তাঁর মতে, বিরোধী দল সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে৷
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ঈদের পর পরই সারা দেশে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা শুরু হবে৷ এখন ঢাকায় বিলবোর্ডের মাধ্যমে যে প্রচার চালানো হচ্ছে, এটা সরকার করছে৷ কিন্তু আওয়ামী লীগ আরো বড় আকারে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রচার চালাবে৷ বিরোধী দলের অপপ্রচারের জবাব দেয়া হবে৷ আর দলকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা হবে৷
অন্যদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডয়চে ভেলেকে জানান, সরকারকে আর সময় দেয় হবেনা৷ তাদের অনেক সময় দেয়া হয়েছে৷ ঈদের পরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে সর্বশক্তি নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন তাঁরা৷ সরকার যদি যৌক্তিক দাবি মেনে না নেয়, তাহলে রাজপধে দাবি আদায়ের কোন বিকল্প নেই৷ তিনি বলেন, সরকার একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে৷
ঈদের পর শুরু হচ্ছে জামায়াতের হরতাল৷ হাইকোর্ট তাদের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার প্রতিবাদে ১৩ ও ১৪ই আগস্ট তারা এই হরতাল পালন করবে৷ বিএনপি তাদের হরতালে এখনো সমর্থন না দিলেও বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো দলের নিবন্ধন বাতিল বা নিষিদ্ধের বিপক্ষে তাঁরা৷
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন'র সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, এখন প্রধান ইস্যু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন ব্যবস্থার অধীনে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরে সংসদ ভেঙে দেয়ার কথা বলেছেন৷ তাই সময় আছে মাত্র দেড় মাস৷ এই সময়ের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করতে হবে৷ কারণ নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যদি কোন সমঝোতা হয়, তাহলে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে৷ কিন্তু সংসদ ভেঙে দেয়ার পর সংবিধান সংশোধন সম্ভব হবেনা৷ তখন বিরোধী দল রাজপথেই সমাধান খুঁজবে৷ তাঁর মতে, রাজপথের সমাধান সংঘাতময় হবে এটাই স্বাভাবিক৷