আফগানিস্তানে বাংলাদেশি জঙ্গি নিহত?
২০ এপ্রিল ২০১৭আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুয়ায়ী, আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রাদমানিশ জানিয়েছেন, ‘‘নিহতদের তালিকায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকরা রয়েছে৷'' তাঁর কথায়, ‘‘হামলায় নিহত জঙ্গিদের অধিকাংশই পাকিস্তান, ভারত, ফিলিপাইন্স ও বাংলাদেশের৷''
জঙ্গি গোষ্ঠী তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর অবস্থান লক্ষ্য করে ১৩ এপ্রিল যে বোমাটি নিক্ষেপ করা হয়, সেটাকে বলা হয় জিবিইউ-৪৩৷ যার অন্য নাম ‘মাদার অফ অল বম্বস'৷ পারমাণবিক বোমার পর এটাই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা৷ সেদিনের হামলার পর ১৮ এপ্রিল ঐ ঘটনায় নিহতদের জাতীয়তা সম্পর্কে জানান আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র৷ তবে কোন দেশের কতজন নাগরিক নিহত হয়েছে, তা নিশ্চিত করেননি তিনি৷ এছাড়া জঙ্গিদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিল কিনা অথবা থাকলে কতজন ছিল, তা অন্য কোনো সূত্র থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি ৷
পেন্টাগন এবং আফগান কর্মকর্তারা জানান, ‘হামলায় আইএস-এর শীর্ষস্থানীয় চার কমান্ডারসহ ৯৬ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে৷' মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র অ্যাডাম স্টাম্প বলেন, ‘‘বোমাটি এমসি-১৩০ যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা হয় আইএস জঙ্গিদের গোপন সুড়ঙ্গ, গুহা ও বাংকারে৷''
বাংলাদেশের পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি সোহেলী ফেরদৌস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ব্যাপারে আফগান সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি৷ ফলে বিষয়টি আমাদের জানা নেই৷ একমাত্র আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এর উল্লেখ আছে৷ তাই আমরা নিশ্চিত নই যে, সেখানে আদৌ কোনো বাংলাদেশি নিহত হয়েছিল কিনা৷ তাছাড়া এ ধরনের তথ্য ইন্টারপোলের মাধ্যমেও জানানোর বিধান আছে৷ তবে ইন্টারপোলের মাধ্যমে কোনো তথ্য বাংলাদেশ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে সময় লাগবে৷''
জঙ্গি বিষয়ক গবেষক এবং মানবাধিকার কর্মী নূর খান ডয়চে ভেলেক বলেন, ‘‘বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বীজ বপন করেছিল আফগান ফেরত মুজাহিদরা৷ তখন তারা ছিল আল-কায়েদা দ্বারা প্রভাবিত৷ আইএস-এর উত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে কিছু তরুণ সিরিয়া ও ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে গিয়ে জিহাদে যোগ দেয়৷ আইএস-এর এখন যে নতুন পরিকল্পনা, তাতে আফগানিস্তানে আইএস-এর সঙ্গে কোনো বাংলাদেশির থাকা নিয়ে তেমন সন্দেহ করার কিছু নেই৷ তাই নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি থাকতেই পারে৷''
তবে তিনি আরো বলেন, ‘‘আফগানিস্তান কখন তথ্য দেবে তার জন্য বসে না থেকে আমাদেরই উচিত হবে যোগাযোগ করে তথ্য আদায়ের চেষ্টা করা৷ তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের আত্মীয়স্বজন যারা বাংলাদেশে আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলা৷ সার্বিক বিবেচনায় আমাদের নিরাপত্তার জন্যই এটা করা দরকার৷''
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের সঙ্গে অনুষ্ঠানিক যোগাযোগ না হলেও বাংলাদেশ পুলিশ নিহত বাংলাদেশিদের জন্য তথ্য জানতে আগ্রহী৷ আর সেটা কীভাবে জানা যায়, তা নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন৷