আফ্রিকায় খরা: ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ভয়
বৃষ্টি নেই, ফসল নেই, আফ্রিকায় বহু দশকের মধ্যে চরম খরায় প্রায় দেড় কোটি মানুষ বিপন্ন, বিশেষ করে ইথিওপিয়ায়৷
বৃষ্টির অপেক্ষায়
ক্যানিস্টারগুলো খালি, অথচ চতুর্দিকে কোথাও এক ফোঁটা খাবার জল নেই৷ গত ৩০ বছরে ইথিওপিয়ায় এরকম খরা হয়নি৷ মাসের পর মাস বৃষ্টি নেই৷ জাতিসংঘ বলছে, এক কোটি মানুষের জন্য অবিলম্বে খাদ্য চাই, এমনকি ক্ষুধিতদের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হতে পারে৷ আফ্রিকার অন্যান্য অঞ্চলেও পরিস্থিতি ভয়াবহ৷
মরছে পশু
ইথিওপিয়ার অধিকাংশ মানুষ চাষবাস করে খান৷ গরুবাছুর পুষে সারা পরিবারের পেট চলে৷ শেষবার নাকি বৃষ্টি হয়েছিল রমজানের সময়, জানালেন আফার অঞ্চলের এক খামারচাষি৷ কিন্তু রমজান তো ছিল জুলাই মাসে! ‘তখন থেকে কোনো বৃষ্টি হয়নি৷ পানি নেই, মাঠে ঘাস নেই৷ মরছে জন্তু-জানোয়ার৷’
বাচ্চাদের বিভীষিকা
এবারকার খরা যেন ১৯৮৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, যেবার ইথিওপিয়ায় দশ লাখ মানুষ প্রাণ হারান৷ এখন দেশে আবার খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, সবচেয়ে ছোটরাই যা-তে কষ্ট পাচ্ছে৷ ইথিওপিয়ার সরকার বলছেন, চার লক্ষ শিশু এমনভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে যে, তাদের ডাক্তার দেখানো দরকার৷
এল নিনিও নির্মম
জিম্বাবুয়েতে ভুট্টার চাষে এবার শুধু কিছু শুকিয়ে যাওয়া ভুট্টার দানা পাওয়া গেছে – যার একটা কারণ হলো এল নিনিও-র প্রত্যাবর্তন৷ বিশ্বের অন্যত্র এই এল নিনিও-র কারণেই আবার বন্যা হচ্ছে৷
অবোলা জীব
এই গরুটির আর দাঁড়িয়ে ওঠার ক্ষমতা নেই৷ জিম্বাবুয়ের মাসভিঙ্গো প্রদেশে খরার ছবি৷ খামারের লোকজন অর্ধমৃত জীবটির পায়ের ফাঁকে গাছের ডাল ঢুকিয়ে তাকে খাড়া করার চেষ্টা করছেন৷ ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়েতে বৃষ্টিপাত হয়েছে তার আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম৷ মাটি শুকনো, ফুটিফাটা৷
নদী যখন শুকিয়ে যায়
এটা মাঠ নয়, ব্ল্যাক উম্ফোলোজি নদীর খাত৷ নদীটি দক্ষিণ আফ্রিকার ডার্বান শহরের উত্তরপূর্বে৷ সাধারণত নদীতে জল থাকে, কিন্তু এবার তা পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে৷ স্থানীয় বাসিন্দারা নদীবক্ষে গর্ত খুঁড়ে চুঁইয়ে ওঠা পানি সংগ্রহ করছেন৷
বৃষ্টি নেই, ফসল নেই, তাই দাম বাড়ছে
মালাউয়ি ঠিক ইথিওপিয়া কিংবা জিম্বাবুয়ের মতোই খরার প্রকোপে৷ রাজধানী লিলংওয়ের বাজারে ভুট্টার দানার মতো খাদ্যশস্যের দাম চড়েছে অভূতপূর্বভাবে৷ ফসল খারাপ হওয়ায় খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়েছে৷ দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, স্থানীয় মানুষদের সামর্থ্যে কুলোচ্ছে না৷