1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ইউরোপের কোনো দেশে শ্রমিকদের বৈধভাবে যাওয়ার সুযোগ নেই’

৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ইউরোপে অভিবাসনের সুযোগ সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বিস্তারিত বলেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ৷

https://p.dw.com/p/3owiT
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদছবি: Private

ডয়চে ভেলে : ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত কয়েকদিন আগে বলেছেন দালালদের পেছনে টাকা খরচ না করে বৈধভাবেই বাংলাদেশিরা ইতালি যেতে পারেন৷ বাংলাদেশের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি আছে৷ সেই চুক্তিটার বিষয়ে একটু বলবেন?

ইমরান আহমদ : আমার জানা মতে এমন কোনো চুক্তি এইক্ষেত্রে নেই৷ যেটা আছে, ওদের বিভিন্ন সিস্টেমে যে অর্ডার দেয়, সেইভাবে কার্যক্রম চলে যাচ্ছে৷ কথা হলো, সরাসরি এখান থেকে ম্যানপাওয়ার হিসেবে ইতালিতে খুব কম মানুষ গেছে৷ এখন এগ্রিকালচার ওয়ার্কার হিসেবে যে কিছু মানুষ নিচ্ছে সেটাও একটা সিস্টেমে নিচ্ছে৷

ইউরোপের কোনো দেশের সঙ্গে কি বাংলাদেশের এমন চুক্তি আছে?

আমার জানা মতে নেই৷ এই ধরনের কোনো চুক্তি এখন পর্যন্ত কারো সঙ্গে নেই৷ অবশ্য আমরা চেষ্টা করছি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এমওইউ করার জন্য, যাতে করে আমাদের শ্রমিকদেরকে এখান থেকে বৈধভাবে পাঠাতে পারি৷

বৈধভাবে দক্ষকর্মী ইউরোপে পাঠাতে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

ইউরোপে একটা সুবিধা আছে, ওখানে ইংরেজি মোটামুটি প্রচলিত আছে৷ বিশেষ করে জার্মানিসহ অনেক দেশ আছে সেসব দেশের ভাষা জানা না থাকলে যারা যান তাদের জন্য অসুবিধা হয়৷ যে চাহিদা এই মুহুর্তে ইউরোপে আছে, নার্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে, সেখানে কিন্তু যারা যাবে তাদের মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে, ফলে ভাষাটা ভালোভাবে শিখে যেতে হবে৷ সেই হিসেবে আমরা ইউরোপের বেশ কয়েকটা দেশের ভাষাটা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি৷ এবং এর সাথে ইউরোপের চাহিদা মোতাবেক সার্টিফিকেশন, এটা যদি আমরা এখানে থেকে দিতে পারি এবং সেটা ওখানে যদি গ্রহণযোগ্য হয়, এমন উদ্যোগও কিন্তু আমরা হাতে নিয়েছি৷

‘ইউরোপের বেশ কয়েকটা দেশের ভাষাটা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি’

জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশ তো নার্সিংসহ নানা খাতে প্রশিক্ষিত কর্মী নিতে চায়৷ এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ কী?

ইতিমধ্যে না, আগে থেকেই দেশ থেকে নার্স বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ এই নিষেধাজ্ঞা কিন্তু তুলে নেওয়া হয়েছে৷ এখন নার্স যেতে পারে৷ কিন্তু সমস্যা হলো ভাষা৷ এই ভাষা শেখানোর জন্য আমরা পদক্ষেপ হাতে নিচ্ছি, যাতে নার্সিং ডিগ্রির সঙ্গে ওরা ভাষাটাও শিখতে পারে এবং সেটা ওখানে গ্রহণযোগ্য হয়৷

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো অনেক বেশি অর্থ নেওয়ার কারণে মানুষ অবৈধভাবে যেতে উৎসাহিত হচ্ছেন৷ এ ব্যাপারে আপনাদের পদক্ষেপ কী?

সত্যি কথা বলতে কী, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আসেনি৷ তবে আমি বলতে পারি, আমাদের কাছে যদি এমন কোনো অভিযোগ আসে, এই মন্ত্রণালয় কিন্তু জিরো টলারেন্সে বিশ্বাস করে এইসব অন্যায়ের ব্যাপারে৷ সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যাকশনে চলে যাবো৷

ইউরোপে বাংলাদেশিদের যাওয়ার মূল কারণ কী? কেবল জীবিকা, নাকি স্থায়ী বাসের জন্য?

সত্যি কথা বলতে গেলে, দেশের যে বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা তাতে মানুষ যে পরিমান উপার্জনের জন্য বিদেশে যায়, ওই উপার্জন কিন্তু দেশেও করতে পারে৷ তাই জীবিকার জন্য মনে হয় না৷ তবে হয়ত উন্নত জীবনের কথা চিন্তা করে বিদেশে যান৷

ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে কতজন বাংলাদেশি মারা গেছেন বা কতজন ফিরে এসেছেন এমন কোনো পরিসংখ্যান আছে?

সত্যি কথা হলো কোনো পরিসংখ্যান নেই৷ কারণ, আমরা নিজেরাও জানি না, অনেকে যারা মারা যায়, তাদের খবর আমরা পাই না৷ এছাড়া তাদের কোনো তথ্যও সংগ্রহ করা হয়নি৷ তবে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি, এই তথ্যগুলো যদি সংগ্রহ করতে পারি, তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ আগামীতে হয়ত জানাতে পারবো৷

যারা মারা যাচ্ছে এবং যারা ফিরে আসছে তাদের বিষয়ে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে থাকে?

এখানে দুইটা হিসেব আছে৷ যারা বৈধ পথে যান আর সেখানে গিয়ে মারা যান, তাদের জন্য এখানে ব্যবস্থা রেখেছি৷ লাশ এলে ৩৫ হাজার টাকা এয়ারপোর্টেই দেওয়া হয় দাফন-কাফনের জন্য৷ আর পরবর্তীতে পরিবারকে আমরা তিন লাখ টাকা দেই৷ অবৈধভাবে যারা ওখানে গিয়ে থাকে, তাদের ব্যাপারে এখনো আমাদের কোনো সুনির্দিষ্ট সিস্টেম করা নেই৷ তবে বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রাখছি, যদি কোনোভাবে ওদের হিসেবে আনা যায়৷

যারা অবৈধভাবে গেছে, তাদের বিষয়টি সরকারের নজরে আনার পর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়?

বেশিরভাগ যারা অবৈধভাবে যায়, তারা নিজেরাও কিন্তু স্বীকার করতে চায় না৷ ফলে তাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়াও কিন্তু কঠিন৷ কিন্তু যারা অবৈধভাবে যায় এবং ওখানে ধরা খায়, ওরা এসে যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে, তাহলে নিশ্চয়ই সরকারি আইন মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷

অবৈধভাবে বিদেশে যারা লোক পাঠায়, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?

সুনির্দিষ্টভাবে যদি আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে কিন্তু আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি৷ প্রথমত মোবাইল কোর্ট করে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি৷ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওদের লাইসেন্সও স্থগিত করে দিচ্ছি৷ পাশাপাশি ফাইন করছি এবং জেলও দিচ্ছি৷

অভিভাসন বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানবপাচারকারীদের যথাযথ শাস্তি হয় না বলেই মানবপাচার বন্ধ হচ্ছে না, এটা কি ঠিক?

মানবপাচার বলতে গেলে, যারা পাঠায় শুধু ওদের কারণে হয় না৷ যারা যেতে চায় ওদের কারণেও হয়৷ ইচ্ছা না থাকলে তো মানবপাচার হয় না৷ টাকা দিয়ে তো হয়ত ইউএইতে বা মধ্যপ্রাচ্যে গেল, ওখান থেকে তুরস্কে বা অন্য কোনো দেশে গেল, এভাবে যাচ্ছে৷ এটা কিন্তু ওয়ানওয়ে ট্রাফিক৷ লাখ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়াটা নিশ্চয় শুধু মানবপাচারকারীর কারণে না, যারা পাচার হতে চায় ওদেরও কিন্তু একটা ব্যাপার আছে৷ কিন্তু আমাদের যে আইনগুলো করা আছে, এখানে যে কেউ ধরা পড়লেই, এই যে লিবিয়ায় যারা ধরা পড়েছে ওদের বিরুদ্ধে কিন্তু সিরিয়াস অ্যাকশন হয়েছে৷ আর আমরা যেহেতু ব্যবস্থা করে রেখেছি, ট্রাইব্যুনালও করা আছে৷ এখানে ছাড় দেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই৷

গতবছর জুনের ছবিঘরটি দেখুন...

ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি সমীর কুমার দে৷
সমীর কুমার দে ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য