ইউরো কাপে রোনাল্ডো বনাম এমবাপে, জার্মানি বনাম স্পেন
ইউরো কাপে চিত্তাকর্ষক কোয়ার্টার ফাইনাল শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে। প্রথমেই চার শক্তিধর দেশের মধ্যে লড়াই।
পর্তুগাল বনাম ফ্রান্স
১৮ বছর আগে ২০০৬-এর বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে মিউনিখে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। রোনাল্ডোর বয়স তখন ২১ বছর। তিনি খেলেছিলেন। তবে ম্যাচের একমাত্র গোল করেন জিনেদিন জিদান। এবার ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি দুই দেশ।
রোনাল্ডোকে নিয়ে
৩৯ বছর বয়সি রোনাল্ডো কি কোয়ার্টার ফাইনালে জ্বলে উঠতে পারবেন? ইউরো কাপে এপর্যন্ত তাকে নিজের পরিচিত ফর্মে দেখা যায়নি। তিনি টাই ব্রেকারে একটা গোল দেয়া ছাড়া তিনকাঠির মধ্যে একটা বলও ঢোকাতে পারেননি। এমনকী পেনাল্টি মিস করেছেন। অতীতে বহুবার ফ্রিকিক থেকে গোল করেছেন। এবার সুবিধাজনক জায়গায় ফ্রিকিক পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি।
ফ্রান্সের চিন্তা
এখনো পর্যন্ত ইউরো কাপে ফ্রান্স সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। তাদের আক্রমণ পেনাল্টি বক্সের কাছে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। তারা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ঠিকই, কিন্তু তাদের খেলা মন ভরাতে পারেনি। ফ্রান্সের নির্বাচনে অতি-দক্ষিণপন্থিরা প্রথম পর্বে ভালো ফল করেছে। দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। তার জের মাঠে পড়ছে কিনা সেই প্রশ্নও উঠছে।
এমবাপের ফর্ম
নাকে আঘাত পাওয়ার পর ফেস গার্ড নিয়ে খেলছেন এমবাপে। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেও তার খেলা মন ভরাতে পারেনি। বার দুয়েক তার পায়ের জাদুর ঝিলিক দেখা গেলেও অন্য সময় তিনি সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি। তার ফর্ম চিন্তায় রাখবে ফ্রান্সকে।
উজ্জীবীত জার্মানি
এবার জার্মানিতে ইউরো কাপ হচ্ছে। দেশের মাঠ ও সমর্থকদের সুবিধা পাচ্ছে তারা। গত আট বছরের মধ্যে এই প্রথমবার তারা ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। যাবতীয় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের এই উঠে আসা সমর্থকদের তৃপ্ত করেছে। জার্মানির খেলায় সেই নাছোড় লড়াই দেখা যাচ্ছে।
কঠিন প্রতিপক্ষ
কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে খেলতে হবে স্পেনের সঙ্গে, যারা এই প্রতিযোগিতা জেতার ক্ষেত্রে অন্যতম ফেভারিট দল। ফলে কোয়ার্টার ফাইনালে সবচেয়ে কঠিন লড়াইয়ে পড়েছে জার্মানি। গ্রুপ পর্বে স্পেন একটা গোলও খায়নি। তবে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জর্জিয়ার বিরুদ্ধে গোল খেয়ে বসে। শেষপর্যন্ত অবশ্য তারা বড় ব্যবধানে জেতে।
স্পেনের সমস্যা
স্পেন সমস্যায় পড়েছে ১৬ বছর বয়সি লামেল ইয়ামালকে নিয়ে। তিনি এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সি প্লেয়ার। জার্মানির ইয়ুথ প্রটেকশন আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কেউ রাত আটটার পর কাজ করতে পারে না। কিন্তু ইয়ামাল যেভাবে খেলছেন, তাতে জরিমানা দিয়েও তাকে মাঠে নামাতে চাইবে স্পেন।
তুরস্ক বনাম নেদারল্যান্ডস
এই ম্যাচ হবে মিউনিখে। এখানেই ইউরো কাপে একমাত্র সাফল্য পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস। বহু বছর পর তারা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। এবার গাকপো ফর্মে আছেন। জাভির দক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তিনি কি জ্বলে উঠতে পারবেন? বলা হয়, তুরস্কের ফুটবলাররা মাঠে অসাধারণ গোল করতে পারেন, আবার গাদা গাদা হলুদ কার্ডও দেখতে হয় তাদের। তাদের সমর্থকরাও মাঠ ভরিয়ে দেবেন।
আসছেন এর্দোয়ান
তুরস্ক বনাম নেদারল্যান্ডসের খেলা দেখতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান মাঠে থাকবেন। আজারবাইজান সফর বাতিল করে জার্মানি আসছেন তিনি। গত ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করার পর তুরস্কের ফুটবলার ডেমিরাল অতি-জাতীয়তাবাদী অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন, যার প্রতিবাদ করে জার্মানি। তুরস্ক সেই আপত্তি উড়িয়ে দিয়ে জানায়, জার্মানি জেনোফোবিয়ায় ভুগছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সংঘাত হয়। উয়েফা এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।