‘‘ইয়াল্লা এরহাল ইয়া বাশার’’
৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ফরাসি এএফপি সংবাদ সংস্থার একটি মনোজ্ঞ বিবরণে ‘‘ইয়াল্লা এরহাল ইয়া বাশার'' গানটির ইতিহাস বিধৃত করা হয়েছে৷ সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলিতে এই গানের কথা দেয়াল লিখন হিসেবে দেখতে পাওয়া যাবে, মিনিবাসের রেডিও থেকে বাজতে শোনা যাবে, মোবাইল ফোনের রিংটোন হিসেবে বেজে উঠবে৷ সিরীয় সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ চালানোর আগে ঘাপটি মেরে থাকা যোদ্ধারাও ইয়াল্লা এরহাল ইয়া বাশার বলেই যুদ্ধে ঝাঁপ দেয়৷ সিরিয়ার বিভিন্ন শহরের পথে পথে যে সব প্রতিবাদী মানুষ প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে মিছিল করে, তাদের কণ্ঠেও এই গান এবং এই ডাক৷
ইব্রাহিম কাশুশ ছিলেন মধ্য সিরিয়ার হামা শহরের এক অপরিচিত গায়ক৷ ২০১১ সালের মার্চ মাসে সিরিয়ায় অভ্যুত্থান শুরু হবার কয়েক মাস পরে হামায় রাতের আঁধারে পথ বিক্ষোভের একটি দৃশ্য ইন্টারনেটে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে: দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা কাশুশের অতি সস্তায়, খেলো ভাবে রেকর্ড করা গানটি গাইছে৷ এর কিছুদিন পরেই কাশুশ'কে গ্রেপ্তার করা হয় এবং গত বছরের জুলাই মাসে তাকে মৃত অবস্থায় একটি নদীতে পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ তার গলা কেটে গলার নলি ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছিল৷
‘বাশার দূর হও' - গেয়েছিলেন কাশুশ৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে মিথ্যাবাদী এবং গর্দভ বলতেও তাঁর দ্বিধা হয়নি৷ ‘তুমি তোমার বৈধতা হারিয়েছ'... ‘স্বাধীনতা আমাদের হাতের কাছে'... ‘শহীদের রক্ত সস্তা নয়'৷ গানের ছন্দ এবং মিল খুব উচ্চপদের নয়৷ অপরদিকে আসাদের আধো-আধো উচ্চারণেরও নকল করা হয়েছে হাসি-কান্নায় মেশানো এই গানে৷
আজ সিরিয়ার বহু শহরে প্রতিবাদের আয়োজকরা নিজেদের কাশুশ বলে ডাকেন৷ বিদ্রোহীদের ‘মকিং বার্ড', ‘গার্ডিয়ান এঞ্জেল' হলেন এই কাশুশ৷ অবশ্য কাশুশ আজ গানের ক্ষেত্রেও একা নন৷ প্যারিসে নির্বাসনরত সিরীয় গায়ক সামিহ শুকেইর'এর ‘‘ইয়া হেফ'' বা ‘কী লজ্জা' গানটিও বিপ্লবীদের প্রিয় হয়ে উঠেছে৷ আসালা'র মতো নামকরা গায়িকা বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এবং সারা বিশ্বে জলসা করে বিপ্লবের জন্য অর্থসংগ্রহ করছেন৷ তবে সিরিয়ার আরব বসন্তের প্রথম কোকিল ইব্রাহিম কাশুশের স্থান তারা কেউই কেড়ে নিতে পারবেন না৷
এসি / এসবি (এএফপি)