1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষণে অধ্যক্ষ ও সুপারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা: হাইকোর্ট

২ জুন ২০২১

সিলেটের এমসি কলেজে এক নববধূকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ অধ্যক্ষ ও ছাত্রাবাসের সুপারের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট৷

https://p.dw.com/p/3uLFD
ছবি: Getty Images/N. Seelam

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, "এ ঘটনায় কলেজ অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ ও হোস্টেল সুপার জীবন কৃষ্ণ আচার্যের দায় পেয়েছে আদালতের গঠন করে দেওয়া তদন্ত কমিটি৷ যে কারণে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা বা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷”

  আইন সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে৷বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সাময়িক বরখাস্ত বা আইন অনুসারে প্রযোজ্য ব্যবস্থা নিতে হবে৷

এ বিষয়ে জারি করা রুল আংশিকভাবে যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেয়৷আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী আর রুলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন৷

অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃত করে রায়ে আদালত বলেছে, "সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের পেছনে হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল৷ প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ওই কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবে ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না৷”

গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে নয়টার দিকে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।পরদিন সকালে ওই নারীর স্বামী শাহ পরান থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ধর্ষণের ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷

আর ধর্ষণের ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদ-প্রতিবেদন নজরে এনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন হাই কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় আদেশের আরজি জানান৷

গতবছর ২৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত এ ঘটনা অনুসন্ধানে কমিটি করে দেয়৷ সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, মুখ্য মহানগর হাকিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সাধারণ) কমিটিতে রাখা হয়৷

কলেজের ছাত্রাবাসে ওই তরুণীকে ধর্ষণ থেকে রক্ষায় অবহেলা ও কলেজ ক্যাম্পাসে অছাত্রদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কলেজ অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারের নীরবতায় তাদের বিরুদ্ধে যথযথ আইগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সেদিন রুল জারি করে হাইকোর্ট৷

শিক্ষা সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার, এমসি কলেজের হোস্টেল সুপারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়৷

গত বছর ২০ অক্টোবরে অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন আদালতে জমা পড়ে৷ সেখানে বলা হয়, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন৷ একজন প্রাক্তন ছাত্র ৫ নম্বর ব্লকের হোস্টেল সুপারের বাসভবন দখল করে ছিলেন৷ প্রাক্তন ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজে হোস্টেলের সিট দখল করে থাকার কারণে এবং প্রাক্তন ছাত্র সাইফুর রহমান হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই কলেজ হোস্টেল এলাকায় ‘গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ' করার সাহস পেয়েছে৷

"ফলে ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী৷ তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে৷ ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে বুধবার রায় দিল আদালত৷

শাহ পরাণ থানার পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য গতবছর ৩ ডিসেম্বর ওই ধর্ষণ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন৷ সেখানে ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানসহ আটজনকে আসামি করা হয়৷

সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক এ বছর ১৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন৷

এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য