করোনাঃ যুক্তরাজ্যকে টপকে গেল ভারত
১২ জুন ২০২০ইটালি, স্পেনকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল আগেই, এ বার ভারত টপকাল যুক্তরাজ্যকেও। ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করার পর প্রতিদিনই প্রায় দশ হাজার করে লোক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
এতদিন যুক্তরাজ্য ছিল করোনায় আক্রান্তের নিরিখে চার নম্বরে। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৯১ হাজার ৫৮৮ জন। ভারতে আক্রান্ত দুই লাখ ৯৭ হাজার ৮৩২ জন। ম-ত আট হাজার ৪৯৮। গত ২৪ মার্চ যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয়, তখন আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ৫০০ জন, মারা গিয়েছিলেন ১০ জন।
এর মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। সেখানেই প্রায় এক লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের নিরিখে চীনের উহানকে ছাড়িয়ে গিয়েছে মুম্বই। উহানেই করোনা শুরু হয়েছিল। দিল্লি আছে তৃতীয় স্থানে। এখানে ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, ৩১ জুলাই নাগাদ শুধু দিল্লিতেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে পাঁচ লাখ।
করোনা যত বাড়ছে, ততই স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। মুম্বইয়ের হাসপাতালে ৩০ শতাংশ চিকিৎসাকর্মী কম। তাই মহারাষ্ট্র সরকার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে সাহায্য চেয়েছে। মহারাষ্ট্র জুড়ে যে ভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আরও বেশি চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী, হাসপাতাল দরকার। মহারাষ্ট্রে পুলিশ, চিকিৎসক, সাংবাদিক, মন্ত্রীরাও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
দিল্লিতেও সরকারি হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগ উঠেছে যে, সেখানে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না। অথচ, হাসপাতালে বেড খালি পড়ে আছে। অভিযোগ, চিকিৎসক ও কর্মী কম থাকায় হাসপাতাল রোগী নিতে চাইছে না। প্রচুর অভিযোগ পাওয়ার পর মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিকরা দিল্লির রাজ্য সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি দেখেছেন।
দিল্লিতে আবার করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে পুরসভা ও রাজ্য সরকারের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। দিল্লিতে সব কটি পুরসভার সঙ্গে যুক্ত বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৯৮। শ্মশানঘাট ও কবরস্থান থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা এই হিসাব দিয়েছেন। অথচ, দিল্লি সরকার বলছে এক হাজার ৮৫ জন করোনায় মারা গিয়েছেন। পরে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, করোনায় মৃত্যু নিয়ে যেন রাজনীতি করা না হয়।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে এর আগে পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, দুইটি ক্ষেত্রেই সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হচ্ছে।
হায়দরাবাদে গান্ধী হাসপাতালের জুনিয়ার ডাক্তাররা তিনদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর তাঁরা বিক্ষোভ দেখানো বন্ধ করেছেন। তাঁদেরও প্রধান দাবি ছিল, চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীর সংখ্যা বাড়াতে হবে।
করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ার পরে প্রায় প্রতিটি রাজ্য থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল অবস্থার ছবি উঠে আসছে। হাসপাতালে বেড কম। বেড থাকলেও চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী কম। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেই তুলনায় পরীক্ষা কম হচ্ছে। সব মিলিয়ে ছবিটা বেশ উদ্বেগজনক।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)