করোনা: চীনে মৃত আড়াই হাজার, ভাইরাস ছড়াচ্ছে এশিয়া ও ইউরোপে
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০মাসখানেক আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঠিক যে আশঙ্কা করেছিল, করোনা পরিস্থিতি সে দিকেই যাচ্ছে। চীন থেকে এ বার ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। ইউরোপে ইটালি, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান, পূর্ব এশিয়ায় দক্ষিণ এবং উত্তর কোরিয়ায় ক্রমশ ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। এ দিকে চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার আরও ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে মোট মৃতের সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে গেল।
গত মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছিলেন, চীনের মতো উচ্চবিত্ত দেশ যে ভাবে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করছে, অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলির পক্ষে তা সম্ভব নয়। ফলে সংক্রমণ চীনের বাইরে চলে গেলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে। সেই আশঙ্কা ক্রমশ বাস্তব হয়ে উঠছে। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ারস্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আরও ১৬১ জনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে দু'জনের। এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হলেন ৭৬৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। রবিবারেই দক্ষিণ কোরিয়ায় চূড়ান্ত করোনা সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছে। উত্তর কোরিয়া থেকেও করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। তবে সে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
ইউরোপেও করোনা আক্রান্ত ছড়াতে শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত শুধু ইটালিতেই ১৫২ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। এর আগে জার্মানিতে করোনার সংক্রমণ মিলেছিল। কিন্তু আইসোলেশনে রেখে তাঁদের সকলকেই বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, জার্মানিতে অধিকাংশ আক্রান্তই একই জায়গা থেকে সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু ইটালির ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমন নয়। বস্তুত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, ইটালিতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইটালি থেকে তাদের দেশে সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য রবিবারই অস্ট্রিয়া ইটালি থেকে আসা সমস্ত ট্রেনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও করোনা ভাইরাস নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করতে চেয়েছেন।
ইরানে করোনার সংক্রমণ আগেই ছড়িয়েছিল। যার জেরে রবিবার পাকিস্তান, তুরস্ক এবং আর্মেনিয়া ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিটি দেশই জানিয়েছে, আপাতত ইরান থেকে কাউকে তাদের দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। নিজেদের দেশের নাগরিকদেরও ইরানে যেতে দেওয়া হবে না। আফগানিস্তানও একই কাজ করতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং মিয়ানমারে এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের প্রকোপ সে ভাবে দেখা যায়নি। কিন্তু যে ভাবে পূর্ব এবং পশ্চিম প্রান্তে করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে এই দেশগুলিরও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, এই দেশগুলিরও করোনার সঙ্গে লড়াই করার মতো পরিকাঠামো তৈরি করে রাখা উচিত।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)