1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা সংকট মোকাবেলায় শিল্পোন্নত বিশ্বের উদ্যোগ

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

করোনা মহামারির ধাক্কায় নিজেদের ঘর সামলানোর পর জি-সেভেন শীর্ষ নেতারা একাধিক আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনায় বসছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন কোভ্যাক্স উদ্যোগে ৪০০ কোটি ডলার অঙ্গীকার করেছেন৷

https://p.dw.com/p/3paXX
ব্রাজিলে একজনকে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে
ব্রাজিলে একজনকে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছেছবি: Bruno Kelly/REUTERS

করোনা সংকট ও তার অর্থনৈতিক পরিণতির মুখে প্রায় গোটা বিশ্ব যখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে, তখনই শিল্পোন্নত দেশগুলির গোষ্ঠী জি-সেভেনের শীর্ষ নেতারা আবার বৈঠকে বসছেন৷ এমন অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে তাদের দাওয়াই কী হবে, তা জানতে অপেক্ষা করে আছে গোটা বিশ্ব৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন এই প্রথম জি-সেভেন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন৷ পূর্বসূরি ডনাল্ড ট্রাম্পের গত চার বছরের শাসনকালে সংঘাতের পর অ্যামেরিকা আবার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পথে ফিরে আসায় কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে৷

করোনা মহামারির কারণে এখনো পর্যন্ত গোটা বিশ্বে প্রায় ২৪ লাখ মানুষের মৃত্যু এবং শান্তিকালীন সময়ে অর্থনীতি সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে৷ প্রাথমিক ধাক্কা সামলাতে প্রত্যেকটি দেশ ঘর সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও এবার বৃহত্তর চিত্রের দিকে নজর দেবার সময় এসে গেছে বলে অনেক নেতা মনে করছেন৷ এমন প্রেক্ষাপটে বাইডেন আন্তর্জাতিক সংকটের জবাব হিসেবে যৌথ আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করছেন৷ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির জন্য টিকা উৎপাদন, সরবরাহ ও বণ্টনের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গড়ে তুলতে আগ্রহী৷ দরিদ্র দেশগুলির জন্য করোনা টিকার ব্যবস্থা করতে কোভ্যাক্স নামের আন্তর্জাতিক উদ্যোগে তিনি ৪০০ কোটি ডলার অঙ্গীকার করতে চলেছেন৷ আপাতত ২০০ কোটি এবং পরে ধাপে ধাপে বাকি অর্থ দেওয়া হবে৷ অর্থনীতিকে আবার চাঙ্গা করার ক্ষেত্রেও তিনি শিল্পোন্নত দেশগুলির মধ্যে সমন্বয়ের উদ্যোগ নিতে চান৷

করোনা সংকটের কারণে লন্ডনে জি-সেভেন শীর্ষ বৈঠকেও নেতারা সশরীরে হাজির থাকতে পারছেন না৷ তাঁরা ভার্চুয়াল টেবিলে হাজির হয়ে আলোচনা করবেন৷ বাইডেন ছাড়াও ইটালির নতুন প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগির উপস্থিতি বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি করছে৷ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন প্রধান হিসেবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় তাঁর অভিজ্ঞতা বাকি নেতাদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ধনী পশ্চিমা দেশগুলির কোভিড-১৯ টিকার ভাণ্ডারের তিন থেকে পাঁচ শতাংশ আফ্রিকার জন্য বরাদ্দ করার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ টিকার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বৈষম্য দূর করার উপর জোর দিয়েছেন তিনি৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও সেই লক্ষ্যে এক ইউরোপীয় উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বলে মাক্রোঁ দাবি করেন৷

জি-সেভেন আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রিটেনও আন্তর্জাতিক উদ্যোগের ডাক দিচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মহামারি সংক্রান্ত এক আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রস্তাব পেশ করেছেন৷ এর আওতায় ভবিষ্যতে কোনো মহামারি দেখা দিলে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে৷ উল্লেখ্য, চীন করোনা মহামারির বিষয়টি প্রথমদিকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করায় সংক্রমণ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল৷

চীনের উত্থান ও সে দেশের নেতৃত্বের মনোভাবও পশ্চিমা বিশ্বের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ পররাষ্ট্র নীতি সংক্রান্ত প্রথম ভাষণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন চীনকে সম্ভবত অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন৷ সে দেশের আগ্রাসী মনোভাব ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো মনোভাব মোকাবিলার অঙ্গীকার করেছেন তিনি৷ তবে ‘একলা চলো রে' নীতির বদলে এ ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক সমন্বয় চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)