কাবুলে বিস্ফোরণে ৪৮ জনের মৃত্যু
১৬ আগস্ট ২০১৮সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক হামলায় কয়েকশ' সাধারণ মানুষ, সৈন্য ও পুলিশ নিহতের ধারাবাহিকতায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটল৷
কাবুলের পশ্চিমাঞ্চলে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ হামলা হয়, যাতে তাঁবু টাঙিয়ে তৈরি করা একটি শ্রেণিকক্ষ উড়ে যায়৷ সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্লাস করছিলেন শিক্ষার্থীরা৷ কয়েক সপ্তাহ ধরে তুলনামূলক শান্ত কাবুল এই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে৷ এতে অন্তত ৬৭ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীও রয়েছেন৷
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দ আলী বলেন, সেখানকার অধিকাংশ ছেলেই মারা গেছে৷
‘‘এটা ভয়াবহ দৃশ্য৷ অনেক শিক্ষার্থীর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায়৷''
সিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিহতদের অনেকের দেহ ঝলসে গেছে৷
স্বজনদের খোঁজে ওই হাসপাতালে ভিড় করেছেন অনেকে৷ ইসতেকলাল হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষার সময় তাঁদের একজন আব্দুল খালিক বলেন, ‘‘আমার ভাই এখানে পড়ছিল৷ সে মারা গেছে৷ আমি তার লাশ নিতে এসেছি৷'
তাৎক্ষণিকভাবে কেউ এ হামলার দায় স্বীকার না করলেও হামলার ধরন আইএসের হামলার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিয়া মতাবলম্বীদের লক্ষ্য করে অনেক হামলা চালায় তারা৷
হামলায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে তালিবান৷
গজনি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে কয়েক দিন ধরে তালিবান ও সরকারি বাহিনীর তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে কাবুলে এ হামলা হলো৷ অক্টোবরের পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে এসব হামলা আফগানিস্তানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকেই তুলে ধরছে৷
এর আগে বুধবার উত্তরাঞ্চলীয় বাগলান প্রদেশে একটি নিরাপত্তা ঘাঁটিতে হামলায় অন্তত নয় পুলিশ ও ৩৫ সেনা সদস্য নিহত হন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান৷ তার আগেও দেশজুড়ে ধারাবাহিক হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্যের মৃত্যু হয়৷
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন গজনিতে লড়াইয়ে দেড়শ'র মতো মানুষের প্রাণহানির তথ্য জানিয়ে সেখানে লড়াই বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে৷ পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এই শহরের সরকারি হাসপাতালগুলো আহতদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে৷
দেশটিতে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা টাডামিচি ইয়ামামোটো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘গজনিতে যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট চরম মানবিক সংকট আফগানিস্তানে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তাকে স্পষ্ট করে তুলছে৷''
এএইচ/এসিবি (রয়টার্স)