1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কুমেরুর বরফ গলছে

২৯ মার্চ ২০১৭

এমনকি গবেষণা কেন্দ্রগুলোকে পাততাড়ি গুটিয়ে অন্যত্র যেতে হচ্ছে, যদি না তাদের কোনো আইসবার্গের ওপরে চড়ে ভেসে যেতে হয়! ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে কুমেরুর জলবায়ু৷

https://p.dw.com/p/2aBzs
Forschung in der Antarktis | Eisberg
ছবি: Natalia Messer

ভঙ্গুর হয়ে চলেছে কুমেরুর জলবায়ু

ব্রিটিশ গবেষণা কেন্দ্র হ্যালি সিক্স-কে অন্যত্র সরে যেতে হবে, কেননা, কেন্দ্রটি যে বরফের ওপর, তা ভেঙে যেতে পারে৷ ট্রাক্টর আর বুলডোজার দিয়ে কয়েক টন ওজনের মডিউলটিকে ডাঙার দিকে ২৩ কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷

হ্যালি সিক্স একটি ভাসমান বরফের পাতের ওপর দাঁড়িয়ে, পরিভাষায় যার নাম ‘ব্রান্ট শেল্ফ আইস’৷ এই বরফের পাতে অনেক ফাটল দেখা দিয়েছে৷ ফাটল আরো বাড়লে বরফের একটা বড় অংশ ভেঙে হিমশৈল হয়ে সাগরে ভেসে যেতে পারে৷

ভাসন্ত বরফের উপর গবেষণা কেন্দ্র

হেল্মহলৎস সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড মেরিন রিসার্চের আলফ্রেড ভেগেনার ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ব্যার্নহার্ড ডিকমান বলেন, ‘‘এই ফাটলটার উপর স্বভাবতই গবেষণা কেন্দ্রের ভাগ্য নির্ভর করছে৷ কেন্দ্রটির অবস্থান এমন যে, হিমশৈল যখন সাগরে ভেসে যাবে, তখন গবেষণা কেন্দ্রটি ঠিক সেই হিমশৈলের ওপর থাকবে৷’’

জার্মান কুমেরু গবেষণা কেন্দ্র নয়মায়ার-৩ অন্য একটি শেল্ফ আইসের পাতের উপর খাড়া৷ তবে এই গবেষণা কেন্দ্রটি আরো ছোট ও অনেক বেশি স্থিতিশীল৷ এখানে বরফ ভাঙলে গবেষণা কেন্দ্রটি ডাঙার দিকে থাকবে৷

কুমেরুর মাঝখান থেকেও বরফের ঢাল চলেছে উপকূলের দিকে৷ কত তাড়াতাড়ি এই বরফ সাগরে পৌঁছাবে, তা নির্ভর করবে উপকূলের শেল্ফ আইসের পাতগুলির ঘনত্ব ও অবস্থার উপর, কেননা, এই শেল্ফ আইস হিমবাহগুলির ব্রেক হিসেবে কাজ করে৷

প্রফেসর ডিকমান জানালেন, ‘‘কিন্তু বেশি বরফ ভেঙে গেলে পাতটা স্থিতিহীন হয়ে পড়বে, ভারসাম্য হারাবে৷ তার ফলে পিছনে হিমবাহের বরফ সোজা সাগরে গিয়ে পড়তে পারে৷ সাগরের পানির উচ্চতার জন্য একটি আইস শেল্ফ ভাঙলে ক্ষতি নেই, কেননা, বরফ জলে ভাসে৷ কাজেই বরফের পাত ভাঙলে সাগরের পানি বাড়বে না৷ কিন্তু মেরুপ্রদেশের ভিতর থেকে যে বরফ আসছে, তার ফলে সাগরের পানির উচ্চতা বাড়বে বৈকি৷’’

বরফের পাত

কাছের একাধিক বরফের পাত ইতিমধ্যেই ভেঙে গেছে৷ ২০০২ সালের পরিস্থিতি শীঘ্র আবার দেখা দিতে পারে বলে গবেষকদের আশঙ্কা৷ সে বছর মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লার্সেন-বি নামের শেল্ফ আইসের পাতটি ছোট ছোট আইসবার্গ, অর্থাৎ হিমশৈলে ভেঙে যায়৷ ২,৬০০ বর্গকিলোমিটার বরফ সাগরে মিশে যায়৷

যে কুমেরু উপদ্বীপের উপর এই বরফের পাতগুলো অবস্থিত, সেই এলাকাটি বিশেষভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত৷ কিন্তু আরো শীতল এলাকাগুলিতেও বরফ গলছে৷ এর মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন বলে অনেক গবেষকের ধারণা৷ জলবায়ু পরিবর্তন দু'ভাবে মেরুপ্রদেশের বরফের ক্ষতি করছে৷ কুমেরুর পশ্চিমাঞ্চলে উষ্ণ জলের স্রোত তলা থেকে বরফ গলাচ্ছে৷ শেল্ফ আইসের বরফের পাতগুলোর উপরের বরফ গরম বাতাসে গলে জলের কুণ্ড তৈরি হচ্ছে৷

জলের কুণ্ড

প্রফেসর ডিকমান জানালেন, ‘‘এই জলের কুণ্ডগুলো আবার শীতকালে জমে যায়৷ কিন্তু সেই নতুন বরফের প্রকৃতি হয় হিমবাহের বরফ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা৷ এই বরফ হয় কিছুটা নরম৷ প্রতিবছর গরমে বরফ গলে কুণ্ডি তৈরি হওয়া চলে বছরের পর বছর৷ তার ফলে বরফ ঝুরঝুরে হয়ে পড়ে৷’’

ব্রিটিশ গবেষণা কেন্দ্রটি আগামী মার্চ মাস থেকে আট মাস বন্ধ থাকবে, কেননা, কুমেরুর শীতে কোনো ত্রাণ অভিযান পাঠানো সম্ভব নয়৷ আর এখানকার বরফ আগামীতে কি করবে বা না করবে, তা বলা কারুর পক্ষেই সম্ভব নয়৷

কর্নেলিয়া বর্মান/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য