ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবু বকর৷ সেদিন ওই হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ঘটে৷ এরপর পুলিশ আসে৷ টিয়ারশেলের আঘাতে মারা যান রাজনীতি থেকে দূরে থাকা বকর৷ ঘটনার আট বছর পরেও জড়িত কারও শাস্তি হয়নি৷
কেবল কি বকর! স্বাধীনতার পর গত চার দশকে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত দেড়শ' ছাত্র প্রাণ হারিয়েছে৷ আহত হয়েছেন হাজার৷ বকরের মৃত্যুর পরের বছর ২০১২ সালের ১৮ মার্চ ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে খুন হয়, সাজা হয় না' শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন করি৷ তাতে দেখিয়েছিলাম, গত চার দশকে দেশের চারটি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন সব মিলিয়ে ১২৯ জন ছাত্র৷ এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৪ জন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়জন ছাত্র মারা যান৷
প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা গেছে, এই সরকারের দুই মেয়াদে ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রতিপক্ষ বা নিজেদের মধ্যে প্রায় ৫০০ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ এসব সংঘর্ষে মোট ৭১ জন মারা যান৷ এর মধ্যে ৫৫ জনই নিহত হন নিজেদের কোন্দলে৷ বিএনপি আমলেও একইভাবে নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়িয়েছিল ছাত্রদল৷ ছাত্রদলের মধ্যে টেন্ডারবাজিতে পড়ে বুয়েট ছাত্রী সনির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা এখনো দেশবাসী ভুলে যায়নি৷
বকর কিংবা সনি৷ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রথা মেনে তদন্ত কমিটি করেছিল৷ থানাতেও মামলা হয়৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ডামাডোলে হারিয়ে গেছে এসব মামলা৷ তাই বিচারের অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের আহাজারি কখনোই শেষ হয় না৷ বকরের ক্ষেত্রে তো মামলার সব আসামি যে খালাস পেয়ে গেছে সেটা পরিবারকেও জানানো হয়নি৷
আবু বকরের মৃত্যুর সময় আমি প্রথম আলোর সাংবাদিক৷ ঘটনার পর তাঁর পরিবারসহ বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম৷ তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকে তখন একটি নোটখাতা পেয়েছিলাম, যেটি বকরের শরীরের রক্ত ভিজে গিয়েছিল৷ সেই খাতায় ছয়টি প্রশ্নের উত্তর লেখা৷ এরপর লেখা শুধু ‘প্রশ্ন:'৷ কী ছিল সেই প্রশ্ন?
অনেক উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি৷ প্রতীকীভাবে হলেও কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই দেশের দলীয় ও ছাত্ররাজনীতিকেই হয়তো প্রশ্ন করে গেছেন বকর৷ হয়তো প্রশ্ন করে গেছেন দেশের শিক্ষাব্যাবস্থাকে, যেখানে একজন সাধারণ ছাত্র লেখাপড়া করতে এসে জীবন হারান৷ হারিয়ে যায় একটি দরিদ্র পরিবারের সব স্বপ্ন৷ বকরের প্রশ্নের মতোই প্রশ্নবিদ্ধ আজকের ছাত্র রাজনীতি৷
অবশ্য প্রশ্ন উঠবেই না কেন? যে দেশের ছাত্ররাজনীতি একসময় ছিল গৌরবের, সেই দেশের ছাত্ররাজনীতি যখন সংঘর্ষ, দলীয় কোন্দল, টেন্ডারবাজি, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, শিক্ষক লাঞ্ছিতকরণ, বোমাবাজি, ইভ টিজিং, দখলদারিত্বের হয়ে ওঠে, তখন তো প্রশ্ন উঠবেই৷
কিন্তু কারা তাহলে এদেশে ছাত্ররাজনীতি করছে? কারাই বা ছাত্রনেতা? আবু বকর হত্যার পর ওই মাসেই দেশের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে একটি সংবাদ করেছিলাম৷ শিরোনাম ছিল ‘ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্বে অছাত্ররা'৷ ওই সংবাদে দেখিয়েছিলাম সেই সময় বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের সভাপতি যিনি ছিলেন, তাঁর বয়স ছিল ৪৭৷ পেশায় ব্যবসায়ী ওই নেতা এর আগে সংসদ নির্বাচন করেও পরাজিত হন৷ কিন্তু তখনো তিনি ছাত্রনতো৷ ছাত্রলীগের নেতাদের সেই তুলনায় বয়স কম থাকলেও তারা কেউ নিয়মিত ছাত্র ছিল না৷ শুধু ছাত্রদল বা ছাত্রলীগই নয়, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র ফ্রন্টে এমনকি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতারাও নিয়মিত ছাত্র ছিলেন না৷ বাংলাদেশে এখন যারা ছাত্র রাজনীতি করছেন, তাদের অধিকাংশেরই এখনো এমন অবস্থা৷ নিয়মিত ছাত্র নয় বলে ছাত্রদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনের চেয়ে দলীয় লেজুড়বৃত্তি করতেই তারা বেশি ব্যস্ত৷
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স স্টাডিজ ২০১২ সালে ছয় হাজার ৫০০ যুবকের ওপর একটি জরিপ করে৷ তাতে দেখা যায়, ৮০ শতাংশের অধিক যুবক ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষণ করেন৷ কিন্তু বায়ান্ন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত যে ছাত্ররাজনীতি আলোকবর্তিকা হয়ে জাতিকে পথ দেখিয়েছে, সেই ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে ৮০ শতাংশের বেশিসংখ্যক যুবক কেন বিরূপ ধারণা পোষণ করেন, সেটি খুজে বের করে সমাধান করা উচিত৷ কারণ, বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির অতীতটা যে অনেক গৌরবের৷
জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ায় ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ছাত্র রাজনীতি বাংলার রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে৷ বিশ শতকের গোড়ার দিকে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ছাত্রদের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণে প্রণোদনা জোগায়৷ তবে জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ সত্ত্বেও ১৯২৮ সালে কংগ্রেসের উদ্যোগে নিখিল বঙ্গ ছাত্র সমিতি গঠিত হওয়ার আগে বাঙালি ছাত্রদের কোনো নিজস্ব সংগঠন ছিল না৷ ১৯৩০ সালের ১২ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত মুসলিম ছাত্রদের একটি সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শহীদুল্লাহ্কে একটি মুসলিম ছাত্র সমিতি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং ১৯৩২ সালে নিখিলবঙ্গ মুসলিম ছাত্র সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বিশেষত ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে জিন্নাহর ঘোষণার পর ওই বছর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম স্টুডেন্টস লীগ গঠন করা হয়৷ এ বছরই শুরু হয় ভাষা আন্দোলন এবং তাতে নেতৃত্ব দেয় এ ছাত্রলীগ৷
ভাষাসমস্যার সমাধান হলেও ছাত্র আন্দোলন থামেনি৷ ১৯৫২ সালে পূর্ববাংলায় বাম রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গড়ে ওঠে ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন৷ ষাটের দশকের পরের সময়টা ছিল ছাত্র রাজনীতির সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়৷
১৯৬৬ সালে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসের যুগান্তকারী ঘটনা৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয়দফা কর্মসূচি এবং পরবর্তীকালে তাঁর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুজু হলে ছয়দফা সমর্থন ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে ছাত্রদের মধ্যে এক নজিরহীন ঐক্য গড়ে ওঠে৷ এ লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালে সকল ছাত্রসংগঠন সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এবং জাতীয় ও সমাজতান্ত্রিক ধারণাপুষ্ট ১১-দফা দাবিনামা উপস্থাপন করে৷ পরিষদ গোড়ার দিকে ১১-দফা দাবির জন্য আন্দোলন করলেও পরবর্তীকালে ছাত্রনেতারা বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে ভাবতে শুরু করেন৷ ১৯৭১ সালের মার্চে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে৷ এরপর স্বাধীনতা যুদ্ধে ছাত্রসংগঠনগুলোর বীরত্বপূর্ণ অবদান সর্বজনস্বীকৃত ও যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে৷
তবে স্বাধীনতার পরই ছাত্র রাজনীতি গতি হারায়৷ ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগে আসে বিভক্তি৷ তৈরি হয় জাসদ ছাত্রলীগ৷ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সামরিক শাসকেরা ক্ষমতায় আসে৷ এরপর তো রাজনীতি চলেছে আরও উল্টোপথে৷ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান গঠন করেন ছাত্রদল৷ সামরিক সরকার ধর্মীয় রাজনীতি শুরুর অনুমতি দিলে জামায়াত গড়ে তোলে তাদের ছাত্র সংগঠন শিবির৷ এরপরেই ক্যাম্পাসগুলোতে শুরু হয় শিবিরের সাথে অন্যদের সংঘর্ষ৷ আশির দশকটা সারা দেশের উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষ চলতে থাকে৷ দিনের পর দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকে৷
অবশ্য স্বাধীনতার পর থেকেই ছাত্রসংগঠন ও ছাত্র নেতৃত্ব পথ হারায়৷ তবে স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এবং ১৯৯১ সালে তাঁর পতন ঘটানোর ক্ষেত্রে পুনরায় ছাত্ররা ঐক্য ও শক্তির পরিচয় দেয়৷ কিন্তু এরপর রাজনতৈকি সরকারগুলো ক্ষমতায় এলে ছাত্রসংগঠনগুলো ক্রমেই তাদের উপাঙ্গ হয়ে ওঠে৷ রাজনৈতিক নেতারা তাঁদের স্বার্থে ছাত্রনেতাদের ব্যবহার শুরু করে৷ ফলে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, সিট দখলের রাজনীতি তো আছেই; সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের বাণিজ্য — ভর্তি, নির্মাণ, উপকরণ সরবরাহ ইত্যাদি শুরু হয়৷ কিন্তু ক্ষমতাসীন ছাত্রনেতারা ক্যাম্পাসে যা ইচ্ছে তা করলেও প্রশাসন সেটি উপেক্ষা করতে শুরু করে কিংবা প্রশ্রয় দেয়৷ প্রতিপক্ষকে পিটিয়ে উপাচার্যদের উদ্ধার করছে সরকারি ছাত্র সংগঠনের নেতারা৷
ছাত্ররাজনীতির পচন নিয়ে কথা বললে আলাপ চলতেই থাকবে৷ কিন্তু এর সমাধান কী? রাজনীতি থেকে দূরে থাকা বা রাজনীতিবিমুখতা কখনো সমাধান নয়৷ বরং দরকার সংস্কার৷ বহুজন ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বহু কথা বললেও সরকার বা দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের কোনো চেষ্টা চোখে পড়েনি৷ অথচ সমস্যা সমাধান করতে হলে রাষ্ট্র এবং সব রাজনৈতিক দল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মিলিতভাবে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে৷ সবার মনে রাখা উচিত, ছাত্রছাত্রীদের মূল কাজ হচ্ছে পড়াশোনা করা৷ ছাত্রনেতাদের ক্ষেত্রেও তাই হওয়া উচিত৷
পেছনে ফিরলে দেখা যাবে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যাঁরা ছাত্ররাজনীতি করতেন, তাঁরা ছিলেন ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রী৷ নিয়মিত ক্লাস করে, পরীক্ষা দিয়ে, নানা বিষয়ের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে তাঁরা নিজেদের রাজনীতিসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডে জড়াতেন৷ কিন্তু এখনকার ছাত্রনেতাদের পড়াশোনার সময় নেই৷ মূল সংগঠনের স্লোগান দেয়ার মধ্যেও তারা চাঁদাবাজি, ঠিকাদারি বা অর্থ আয়ের পথ খোঁজে৷ ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনগুলো আবাসিক হলগুলোতে সিট বাণিজ্য করে৷ জোর করে শিক্ষার্থীদের মিছিল মিটিংয়ে নেওয়া হয়৷ কেউ না গেলেই নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গেস্টরুম' বলে একটি ভয়াবহ কালচার গড়ে উঠেছে৷ সমস্যা সমাধানে এসব বন্ধ করে সবাইকে আগে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনা জরুরি৷ আর যারা ছাত্র রাজনীতি করবেন, তাদের দলীয় রাজনীতির চেয়ে ছাত্রদের অধিকার বা শিক্ষার অধিকারকে প্রাধান্য দিতে হবে৷ তবে দেশের প্রয়োজনে অবশ্যই তারা নামবে৷
বর্তমান ছাত্র রাজনীতির আরেকটা মূল সমস্যা, যারা নেতা তাদের হয় ছাত্রত্ব নেই, কিংবা থাকলেও তারা নিয়মিত ছাত্র নন৷ অথচ এমন আইন করা উচিত যাতে এসএসি পরীক্ষার জন্য কেউ নিবন্ধন করার ১০ বছর পর আর কেউ ছাত্র রাজনীতি করতে পারবে না৷ তাতে দেখা যাবে ২৫ থেকে ২৭ বছর বয়সেই একজনের ছাত্র রাজনীতি শেষ হবে৷
ছাত্র রাজনীতির আজকের এই দশার আরকেটা বড় কারণ কারও কাছে দলীয় নেতারা ছাড়া ছাত্রনেতাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই৷ ছাত্র সংসদগুলো থাকলে সেটা অন্তত হতো৷ ছাত্রসংগঠনগুলো তখন যা খুশি করতে পারতো না৷ কিন্তু ৯০-পরবর্তী সময়কালে রাজনৈতিক সরকারগুলো ছাত্র সংসদগুলো বন্ধ করে দিলো৷ অথচ এই সংসদই ছিল ক্যাম্পাসের প্রাণ৷ ছাত্রসংসদগুলোর নেতৃত্বে ক্যাম্পাসগুলোতে অতীতে সৃজনশীলতার যে বিকাশ হয়েছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ হওয়ায় সেটিও শেষ হয়ে গেলো৷ উলটো দিকে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সরকার ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগলোতে শুরু হলো ক্ষমতাসীনদের একচ্ছত্র দাপট৷ সমস্যা সমাধানে সবার আগে প্রয়োজন ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন দেয়া৷
আশার কথা হলো, চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের হাই কোর্ট ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে৷ ওই নির্বাচনের সময় যদি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তার দরকার হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সে বিষয়ে ‘যথাযথ সহযোগিতা'দিতেও বলেছে আদালত৷ সরকারের উচিত এখন ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা৷ তাতে সাধারণ ছাত্রদের কাছে যেমন ছাত্রনেতাদের জবাবদিহিতা তৈরি হবে, জাতীয় রাজনীতিও সমৃদ্ধ হবে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷