ক্ষত শুকায়নি আইলায় ক্ষতিগ্রস্তদের
১০ ডিসেম্বর ২০১০উপকূলের ১১টি জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ঘুর্ণিঝড়ের পর এখনো মানুষের ক্ষত শুকায়নি৷ ঐ ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির একটি হিসাব করে সরকার জানিয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৯শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে৷ ঝড়ে মারা যায় তিন শতাধিক মানুষ আর অগুনতি পশুপাখি৷ আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে এ পর্যন্ত কয়েকশ কোটি টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছে৷ ঘূর্ণিঝড় আইলার সময় উন্নয়ন-সহযোগীদের কাছ থেকে যে প্রতিশ্রুতি মিলেছিল, তার অনেকটাই আসেনি৷
উন্নয়ন সহযোগীদের অন্যতম জাতিসংঘ৷ সেই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ৯০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মাত্র ২৫ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যায়৷ বিশ্বব্যাংক ও এডিবি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাঁধ সংস্কারের জন্য যে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি৷ সাতক্ষীরার সাগর পাড়ের রহিমাদের বাড়ি ভেসে গেছে বানের জলে৷ অনেকের মতো তাদের বাড়িও ছিল বাঁধের অপর প্রান্তে৷ ঐ বাঁধ দিয়ে বানের পানি আসতে বাধা দেয়া হতো৷ কিন্তু আইলার প্রচণ্ডতায় সেটি টিকতে পারেনি৷ এখন তাদের আশ্রয় একটি সরু বেরি বাঁধের উপর৷
আইলার আঘাতের পর উপকূলীয় সেই সব এলাকার বাড়িতে বাড়িতে থাকা টিউবওয়েলে উঠছে অতিমাত্রায় লবণাক্ত পানি৷ এই এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে স্থানীয়রা তেমন সহায়তা পাননি বলেই অনেকের অভিযোগ৷ তবে বাংলাদেশে জাতিসংঘের এই ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, বাঁধ নির্মাণসহ শিক্ষা, খাদ্যনিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, জীবিকা নিশ্চিত করতে বাড়তি ৩৫ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহের জন্য প্রয়াস চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷
সম্প্রতি জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি সম্মেলন৷ এখানে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের ‘দেশ' টিভির সাংবাদিক নজরুল কবির৷ তিনি জানালেন, ঐ সম্মেলনে আইলা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়৷ সেখানে তিনি জানিয়েছেন, আইলায় ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো বেশ সমস্যার মধ্যে আছেন৷ সেখানে ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলো মেরামত করা জরুরি৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক