খালেদার অবসর নেয়ার সময়?
২৪ ডিসেম্বর ২০১৫সোমবার ঢাকায় এক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহিদ হয়েছে৷ এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে৷''
মুক্তিযুদ্ধে কতজন শহিদ হয়েছেন সে বিষয়ে ২০১৩ সালে সামহয়্যার ইন ব্লগে একটি ব্লগ লিখেছিলেন পিনাকী ভট্টাচার্য৷ সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর জে রুমেল এর একটি বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বইতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষের শহিদ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে৷ ‘‘... বইটিতে শুধু বাংলাদেশ নয়, ভিয়েতনাম যুদ্ধ পর্যন্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক যুদ্ধের পরিসংখ্যান দেয়া আছে এবং এই বইটি একটা বিশ্বব্যাপী গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক রেফারেন্স'', বলেন পিনাকী৷
খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছে আওয়ামী লীগ৷ দলটির টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে চারটি ছবি সহ একটি টুইট করা হয়েছে৷ ছবিগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদের সংখ্যা নিয়ে কোথায়, কী বলা হয়েছে সেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে৷ আওয়ামী লীগ মনে করছে, শহিদের সংখ্যা নিয়ে পাকিস্তানের যে অবস্থান, খালেদাও সেই অবস্থান নিয়েছেন৷
একটি বেসরকারি চ্যানেলের প্রধান বার্তা সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু মনে করছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার সময় হয়ে গেছে৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘‘যে-কোনো কিছুরই একটি স্বাভাবিক পরিসমাপ্তি আছে৷ ওই স্বাভাবিকতা মেনে না চললে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়৷ আমার মনে হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার সময় হয়ে গেছে...৷''
ইফতেখার মোহাম্মদ খালেদা জিয়ার বক্তব্যের ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে কুতর্ক করে খালেদা প্রমাণ দিলেন তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কেউ নন৷ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলে কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নাই, কারণ এরা খালেদার এই বক্তব্যের কোনো প্রতিবাদ করেনি৷ রাজাকারের গাড়িতে যেমন পতাকা দিয়েছেন খালেদা, ঠিক তেমনি আগামীতে সুযোগ পেলে মুক্তিযুদ্ধকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে বিলিন করে দিবেন৷'' কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা খালেদার সমর্থনে থাকতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন ইফতেখার৷
শওগাত আলী সাগর অবশ্য খালেদা জিয়ার কথায় বিস্মিত হননি৷ কারণ তিনি মনে করেন, খালেদা জিয়া যে রাজনীতি করেন, যে আদর্শের রাজনীতি করেন – সেখানে মুক্তিযুদ্ধটাই ‘বিতর্কিত' বিষয়৷ ‘‘আজ তিনি বলেছেন, শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে, আগামীকাল বলবেন – ইউ নো হোয়াট, মুক্তিযুদ্ধ নিয়েই আসলে বিতর্ক আছে'', ফেসবুকে লিখেছেন সাগর৷
খালেদা জিয়া কেন এমন মন্তব্য করলেন সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না জাহিদুল হক৷
তবে খালেদার বক্তব্য নিয়ে আবেগ দিয়ে তর্ক করার পক্ষে নন তারেক মোরতাজা৷ তিনি লিখেছেন, সংখ্যাভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর আবেগ নয়, সংখ্যা দিয়েই দেওয়া উচিত৷ মোরতাজা মনে করেন, এতদিনে শহিদদের তালিকা তৈরি করা গেলে কেউ এটি নিয়ে কথা বলতে পারত না৷
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
আপনার কী মনে হয় বন্ধু? খালেদা জিয়ার কি অবসর নেয়া উচিত? জানান নীচের ঘরে৷