গোপন স্থানে গাদ্দাফির দাফন, নাইজারের পথে সাইফ
২৫ অক্টোবর ২০১১সির্ত শহরে গত বৃহস্পতিবার নিহত হন গাদ্দাফি, ছেলে মুতাসসিম এবং সাবেক মন্ত্রী ইউনিস জাবের৷ তবে গাদ্দাফিকে জীবিত আটক করার পর কে বা কারা কীভাবে হত্যা করল তা নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়ে গেছে৷ অবশ্য আরো নতুন কোন বিতর্ক এড়াতে গত চারদিন মিসরাতা শহরের একটি হিমাগারে তাদের মৃতদেহ রাখা হয়েছিল৷ তা জনসাধারণের দেখার জন্য উন্মুক্ত ছিল৷ লিবিয়ার শত শত মানুষ সারিবদ্ধভাবে তাদের মৃতদেহ দেখেছেন এবং ছবি ধারণ করেছেন৷ তবে গত চার দশকের এই দাপুটে নেতাকে কোথায় কবর দেওয়া হবে তা নিয়ে প্রচুর জল্পনা কল্পনা চলছিল৷ অবশেষে তাদের কবর দেওয়া হয়েছে সাহারা মরুভূমির অজ্ঞাত কোন স্থানে৷ গাদ্দাফির দেহ তাঁর আত্মীয় স্বজনের কাছে হস্তান্তরের কথা বলা হলেও শেষে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল৷
ইসলাম ধর্মের বিধান অনুসারে সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেই তাদের কবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনটিসি কমান্ডার আব্দেল মাজিদ ম্লেগটা৷ তিনি বলেন, গাদ্দাফির অনুগত ধর্মগুরু খালেদ তানতুশ গাদ্দাফির নামাজে জানাজা পড়ান৷ এসময় গাদ্দাফির দুই চাচাতো ভাই মানসুর দাও ইব্রাহিম এবং আহমেদ ইব্রাহিম সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷ অবশ্য মৌলভি তানতুশ এবং দুই ভাই মানসুর ও আহমেদ সবাই এনটিসি'র হাতে বন্দি অবস্থায় সেখানে ছিলেন৷ এরপর এনটিসি'র বিশ্বস্ত দুই জন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের কবর দেওয়ার৷ মূলত গাদ্দাফির কবর যেন মাজারে পরিণত না হয় সেজন্যই এমন কড়া গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছে৷
এদিকে, নাইজারের তুয়ারেগ গোষ্ঠীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাদ্দাফির অপর ছেলে সাইফ আল ইসলাম গাদ্দাফি নাইজারে আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন৷ মূলত গাদ্দাফির শক্তিশালী সমর্থক তুয়ারেগ গোষ্ঠী সাইফকে সহায়তা করছে বলে জানান আগাদেজ আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য রিসা আগবোলা৷ এর আগে গত সেপ্টেম্বরে গাদ্দাফির অপর ছেলে আল সাদি গাদ্দাফিও ঐ একই গোষ্ঠীর সহায়তায় লিবিয়া থেকে নাইজারে পালিয়ে গিয়েছিলেন৷ উল্লেখ্য, লিবিয়ায় সাধারণ মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালানোর দায়ে সাইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে রেখেছে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত৷ তবে জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া গাদ্দাফি প্রশাসনের কাউকে লিবিয়ায় ফেরত পাঠাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে নাইজার সরকার৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন