গোমাংস রাখার অপরাধে মধ্যপ্রদেশে ১১ জনের ঘর ভাঙল পুলিশ
১৮ জুন ২০২৪উত্তর এবং মধ্য়ভারতের একটি বড় অংশকে হিন্দি বলয় বা গো-বলয় বলা হয়। এই অঞ্চলে গরুর মাংস নিষিদ্ধ। তবে মহিষের মাংস নিষিদ্ধ নয়। মধ্য়প্রদেশ এই গোবলয়ের অংশ।
মধ্য়প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, জনজাতি অধ্য়ুষিত মানডলা অঞ্চলে কিছু ব্য়ক্তি গরুর মাংসের ব্য়বসা করছে বলে তারা খবর পায়। সেই সূত্র ধরেই তারা এলাকায় পৌঁছায় এবং দেখে, ১১টি বাড়িতে ফ্রিজে গরুর মাংস রাখা আছে। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের অভিযোগ, ঘরের ভিতর থেকে পশুর কঙ্কালও তারা পেয়েছে। ঘরগুলির পিছনে ১৫০টি গরু বাঁধা ছিল বলেও অভিযোগ করেছে পুলিশ। ১১টি বাড়ি থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একইসঙ্গে ওই বাড়িগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে গোটা দেশেই। হায়দরাবাদের এমপি আসাদুদ্দিন ওয়েসি সমাজমাধ্য়মে পোস্ট করে বলেছেন, ''বিজেপির মধ্য়প্রদেশে একটি ধর্মের মানুষকেই বেছে বেছে আক্রমণ করা হচ্ছে।'' কেন ওই ব্য়ক্তিদের বাড়ি ভাঙা হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আসাদুদ্দিন।
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেছেন, আসাদুদ্দিন অকারণ রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন। ওই ব্য়ক্তিরা সরকারি জমির উপর বাড়ি বানিয়ে বেআইনি ব্য়বসা করছিলেন বলে তাদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, মোহন যাদব বলেছেন, ওই ব্য়ক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্য়বস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার ব্য়ক্তির বিরুদ্ধে পশু-নির্যাতন আইনে মামলা করা হয়েছে। যার জেরে তার সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। যাদব জানিয়েছেন, ২০২৪ সাল 'গোবংশ রক্ষা'র বছর হিসেবে পালন করতে চান তিনি।
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''মধ্য়প্রদেশে গোমাংস বিক্রি নিষিদ্ধ। সরকারি জমিতে বাড়ি বানিয়ে ব্য়বসা করাও নিষিদ্ধ। কিন্তু বিচারের কাজ আদালতের। আদালত রায় দিলে সেই মতো শাস্তি হবে। পুলিশ বা সরকার স্বতঃপ্রমোদিত হয়ে এমন কাজ করতে পারে কি?''
সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''মহম্মদ আকলাখের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ফ্রিজে গোমাংস আছে এই অভিযোগে, আকলাখকে পিটিয়ে হত্য়া করা হয়েছিল। আর মধ্য়প্রদেশে পুলিশ নিজেই আইন হাতে তুলে নিয়েছে। পুলিশ যা করেছে তা ঠিক নয়।''
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)