গ্রিনপিসের প্রধান জার্মানির নতুন জলবায়ূ দূত
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২জার্মানির বর্তমান জোট সরকারে সবুজ দল শরিক হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়টি যে বাড়তি গুরুত্ব পাবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না৷ তবে সরকার গঠনের প্রায় দুই মাসের মাথায় সে দেশের জলবায়ু সংক্রান্ত বিশেষ দূত হিসেবে খোদ গ্রিনপিসের প্রধানকে নিয়োগের ঘটনা অবশ্যই দেশে-বিদেশে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে৷ গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশানালের নির্বাহী পরিচালক জেনিফার মর্গান আগামী ১লা মার্চ জার্মান সরকারের নতুন এই পদ গ্রহণ করছেন৷ বুধবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এই ঘোষণা করেন৷ তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত তাঁর কাছে এক স্বপ্নের মতো এবং আন্তর্জাতিক স্তরে জলবায়ু সংরক্ষণের উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ এক বার্তা বহন করছে৷ পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে জলবায়ু সংকটকে অ্যাজেন্ডার শীর্ষে রেখে জার্মানি বিশেষ সংকেত পাঠাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বেয়ারবক৷
মার্কিন নাগরিক হলেও জার্মান ভাষায় পারদর্শী মর্গান৷ ৬৬ বছর বয়সি এই নারী নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরে বাস করেন৷ জলবায়ু সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তার বিশাল অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক স্তরে তার বিস্তর যোগাযোগ রয়েছে৷ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতি নিয়ে কাজ করেছেন৷ মার্কিন নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও মর্গান কীভাবে জার্মানির কূটনীতিক হিসেবে কাজ করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেনিফার মর্গান জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণ করছেন৷ তারপর তিনি ‘স্টেট সেক্রেটারি' হিসেবে কাজ করতে পারবেন৷ জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজে আরও দক্ষতা আনতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন৷
আন্তর্জাতিক স্তরে জলবায়ু মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তা বরাবর তুলে ধরেছেন জেনিফার মর্গান৷ তাঁর মতে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা এক দশমিক পাঁচ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য পূরণের জন্য হাতে সময় খুব কম৷ ফলে অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে৷ দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের অভিজ্ঞতার সুবাদে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সক্রিয় হয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি কাজের সুযোগ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন৷ আগামী নভেম্বর মাসে মিশরে জাতিসংঘের পরবর্তী জলবায়ু সম্মেলনের জন্য জার্মানিকে প্রস্তুত করা তাঁর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হবে৷ উল্লেখ্য, চলতি বছর শিল্পোন্নত দেশগুলির গোষ্ঠী জি-সেভেনের সভাপতিত্বের দায়িত্ব পেয়ে জার্মানি শীর্ষ স্তরের শিল্পোন্নত দেশগুলিকে নিয়ে এক ‘ক্লাইমেট ক্লাব' গঠন করতে চায়৷ সেই উদ্যোগেও মর্গানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ২০৪৫ সালের মধ্যে জার্মানি কার্বন নির্গমন পুরোপুরি বন্ধ করার অঙ্গীকার করে জাতীয় স্তরেও বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ সবুজ দলের নেতা এবং জার্মানির অর্থনীতি, জ্বালানি ও জলবায়ু সংরক্ষণ মন্ত্রী গত মাসেই বিশাল এই কার্যভার সম্পর্কে সচেতন করে দিয়েছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)