ছোটদের চোখে আজ থেকে ৫০ বছর পরের পৃথিবী
জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যেই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, আরো ৫০ বছরে কী হবে কে জানে৷ আজকের কচিকাঁচাদের অনেকেই তখন এই পৃথিবীতেই থাকবে৷ কেমন হবে সে পৃথিবী? তারা নিজেরাই এঁকে দেখানোর চেষ্টা করেছে৷
জলমগ্ন পৃথিবী
দশ বছর বয়সের সামুয়েল ইতিমধ্যেই জানে, আমাদের সুপরিচিত গ্রহের কী দশা হতে চলেছে: সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে উপকূলের মানুষদের জীবিকা ও জীবন বিপন্ন করবে৷ কিন্তু কেন তা ঘটবে? ‘‘চরম পরিবেশ দূষণের কারণে’’, বলে সামুয়েল৷
শেষ সূর্যাস্ত?
সাত বছর বয়সের ডানিয়েল সূর্যকে খুব পছন্দ করে – কিন্তু ৫০ বছর পরে সূর্য বলে কি কিছু থাকবে? সূর্য খুব বেশি বদলাবে না বলেই ডানিয়েলের আশা, নয়ত এমন অপরূপ সব সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত আসবে কোথা থেকে? তবে ডানিয়েল ইতিমধ্যেই তার বাবা-মাকে বাড়িতে সব কিছু রিসাইকেল করতে বলেছে৷ সাবধানের মার নেই!
উড়ন্ত গাড়ি
দশ বছর বয়সের পালোমার কল্পনায় ভবিষ্যতের গাড়ি রাস্তায় না চলে, আকাশে চলবে – তবে গাড়ির ধোঁয়া থেকে বায়ুদূষণ একই থাকবে, পালোমার ছবি দেখলে যা বোঝা যায়৷ অপরদিকে গাছপালার চিহ্নমাত্র বাকি নেই৷ ছবির ডান কোণায় একটা জাহাজ – সেটা কি খরায় আটকে পড়েছে, নাকি সাগরের পানি বেড়ে শহরে ঢুকে পড়েছে?
বড্ড গরম!
সাত বছরের এমা সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ঘুরে এসেছে: সেখানে আর সবই ভালো, শুধু গরমটা একটু বেশি৷ এমা তার মায়ের কাছ থেকে শুনেছে যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে৷ কাজেই এমার কল্পনায় ভবিষ্যতে সূর্য জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাবে আর পৃথিবীর মানুষরা রকেটে চড়ে অন্য গ্রহে পালাতে বাধ্য হবে৷
চলো মঙ্গলগ্রহে যাই
বারো বছর বয়সের লিনুস-এর মতে ৫০ বছর বাদে পৃথিবী আর মানুষের বাসযোগ্য থাকবে না, কাজেই লিনুস মঙ্গলগ্রহে বাস করার স্বপ্ন দেখছে – সেটাও স্বপ্ন না দুঃস্বপ্ন, বলা মুশকিল, কেননা মানুষ দৃশ্যত মঙ্গলগ্রহেও একই রকম পরিবেশ দূষণ চালাবে৷ তাহলে কি কোনো আশাই নেই? ‘‘আমরা এখনও তা বন্ধ করতে পারি’’, বলছে লিনুস৷
প্রকৃতির বদলে প্রযুক্তি
বারো বছরের ইয়ান-এর মতে ২০৬৭ সালের মধ্যে পৃথিবীতে প্রকৃতির স্থান দখল করবে প্রযুক্তি৷ তাই ইয়ান-এর কল্পনায় ভবিষ্যতে আকাশছোঁয়া বাড়ির চারপাশে নানা আজগুবি যান ঘুরে বেড়াবে আর হলিউডের ওপর দিয়ে উড়ে যাবে স্যামসাং গ্যালাক্সির প্লেন৷
কার্বন ফুটপ্রিন্ট নয়, হ্যান্ডপ্রিন্ট
‘কার্বন পায়ের ছাপ’ – ছয় বছরের আস্ট্রিড কথাটা স্কুলে শুনেছে ও ঠিকই শুনেছে৷ তবে আস্ট্রিডের কল্পনায় সেই কার্বন পায়ের ছাপ আমাদের কার্বন হাতের ছাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কাজেই আস্ট্রিডের ছবিতে ভবিষ্যতের পৃথিবী আমাদের পরিবেশ দূষণের প্রায় অদৃশ্য হাতের ছাপ বহণ করছে৷
যন্ত্রদানব
দশ বছরের মিগেল-এর ছবিতে একটি যান্ত্রিক রোবটের মুখ থেকে রশ্মি বেরিয়ে বাড়িঘর ধ্বংস করছে৷ এই রোবট যেমন একদিকে আমাদের যন্ত্রসভ্যতার প্রতীক, অপরদিকে সে হয়ত হাল আমলের ফ্যাংকেনস্টাইনের মতো মানুষের সৃষ্ট আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স, যা শেষমেষ মানুষকেই আক্রমণ করছে৷
ট্র্যাজেডি
সাত বছরের ইউডিথ-এর কল্পনায় একদিন না একদিন অন্য গ্রহের জীবরা মহাকাশযানে চড়ে এসে পৃথিবীর সব মানুষকে, এমনকি পশুপাখিদেরও মেরে ফেলবে৷ তা বলে ইউডিথ যে পরিবেশ সচেতন নয়, এমন কথা কেউ বলতে পারবে না৷ ইতিমধ্যেই সে প্রতি পাতার দু’পাশেই ছবি আঁকে...৷