জার্মানিতে করোনা টিকার নতুন নিয়ম
৩ আগস্ট ২০২১জার্মানিতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের জন্য মে মাসেই বায়োনটেক-ফাইজার ও পরে মডার্না কোম্পানির করোনা টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু দেশের টিকা কমিশন শুধু এই বয়সের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য সেই টিকা নেবার পরামর্শ দিয়েছিল৷ অর্থাৎ, ডায়াবেটিস বা স্থূলতার মতো সমস্যা থাকলে তবেই টিকা নেবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করে কমিশন৷ সোমবার ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা সেই পরামর্শ উপেক্ষা করে সব ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের জন্য টিকা নেবার সুযোগ করে দিলেন৷ ফলে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো এই কিশোর-কিশোরীরাও সরকারি টিকাকেন্দ্রসহ যে কোনো জায়গায় গিয়ে করোনা টিকা নিতে পারবে৷ উল্লেখ্য, ১২ বছরের কমবয়সিদের জন্য এখনো কোনো দেশে টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি৷
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, দেশে সব বয়সের মানুষকে দেবার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ করোনা টিকা রয়েছে৷ চলমান গ্রীষ্মে যে কেউ সেই টিকা নিতে পারেন৷ গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল খোলার সময় বিশেষ করে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মোকাবিলা করতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা আশা করছেন৷ জার্মানিতে এখনো পর্যন্ত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কমপক্ষে টিকার একটি ডোজ এবং প্রায় দশ শতাংশ দুটি ডোজই পেয়ে গেছে৷ জার্মানির পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট বলেন, সোমবারের সিদ্ধান্তের ফলে অনেক বাবা-মা দ্বন্দ্ব কাটিয়ে সন্তানদের করোনা টিকা দেবার ব্যবস্থা করতে পারেন৷
মঙ্গলবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বয়স্ক ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ সেপ্টেম্বর মাস থেকে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নেবার সুযোগও পাবেন৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান বলেন, একাধিক গবেষণা অনুযায়ী এমন সব মানুষের শরীরে টিকা সত্ত্বেও প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়৷ ফলে আসন্ন হেমন্ত ও শীতকালে তাদের বায়োনটেক বা মডার্না কোম্পানির টিকা দিয়ে আরো সুরক্ষিত করে তোলা হবে৷ এমনকি প্রথমে অ্যাস্ট্রাজেনিকা বা জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির টিকা পেয়ে থাকলেও বুস্টার হিসেবে শুধু এমআরএনএ টিকা দেওয়া হবে৷ বৃদ্ধাবাসে মোবাইল টিকা টিম পাঠিয়ে বয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেবার ব্যবস্থা করবে সরকার৷
প্রতিবেশী দেশগুলির তুলনায় জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার এখনো অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও সরকার ও প্রশাসন করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ এড়াতে একাধিক পদক্ষেপ নিতে চাইছে৷ টিকা কর্মসূচির গতি বাড়ানোর পাশাপাশি বহিরাগতের জন্য বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ১০ই আগস্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে৷ সম্ভবত বেশিরভাগ মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীরা৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি, এএফপি)