জার্মানিতে ১২ বছর পর আবার মূল্যস্ফীতি ৩% ছাড়ালো
৩০ জুলাই ২০২১গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি হয়েছে তিন দশমিক আট শতাংশ৷ বৃহস্পতিবার ফেডারেল পরিসংখ্যান ব্যুরো এ তথ্য জানিয়েছে৷ সবশেষ ২০০৮ সালের আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি তিন শতাংশ ছাড়িয়েছিল৷ পরিসংখ্যান সংস্থা ডিস্টাটিস প্রাথমিক গণনার ওপর ভিত্তি করে এই তথ্য জানিয়েছে৷
মূল্যস্ফীতির কারণ
ডিস্টাটিস্টা বলছে ২০২০ সালে ছয় মাসের কর অব্যাহতি এর একটি কারণ৷ করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর পণ্যের চাহিদা কমে গেলে ভ্যাট ১৯ শতাংশ এবং ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৬ শতাংশ এবং পাঁচ শতাংশ করে৷
এ বছরের শুরুতে দোকানপাট আবার খোলার পর আগের ভ্যাট হার পুনরায় চালু করা হয়৷
জ্বালানির দাম আরেকটি কারণ৷ গত কয়েক মাস ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হারে বাড়ছে দাম৷ যেসব গ্রাহক জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করছেন তাদের জানুয়ারি থেকে প্রতি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমণের জন্য ২৫ ইউরো করে বাড়তি দিতে হচ্ছে৷
কী প্রভাব পড়তে পারে?
মূল্যস্ফীতি পরিমাপে সাধারণত এক বছর আগের একই সময়ের সঙ্গে পণ্য়ের মূল্যের তুলনা করা হয়৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের মতে কোনো পণ্য বা সেবার দাম সময়ের সঙ্গে কতটা বেড়েছে মূল্যস্ফীতি দিয়ে তা বোঝা যায়৷
মূল্যস্ফীতির পর বেতন না বাড়লে অনেকের ক্রয়ক্ষমতা কমতে পারে৷
জার্মানদের মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ঐতিহাসিক কারণেই এক ধরনের ভীতি কাজ করে৷ চরম মূল্যস্ফীতির কারণে ১৯২০ সালের দিকে দেশটির অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল৷ এর ফলে রাজনীতিতেও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যার ফলে ভাইমার রিপাবলিক এবং পরবর্তীতে নাৎসি বাহিনী ক্ষমতায় আসে৷
এরপর কী?
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি দুই শতাংশ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে৷ কোনো দেশের মূল্যস্ফীতি এর চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গেলে ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে৷
তবে জার্মানির পরিসংখ্যান সংস্থা অবশ্য জার্মানির সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতিকে সাময়িক এবং মহামারি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া হিসাবেই দেখছে৷ তবে জার্মান মূল্যস্ফীতির ফলে ইউরো অঞ্চলে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থনৈতিক ভর্তুকি দেয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে৷
অনেক বিশ্লেষকই বলছেন, আগামী মাসগুলোতে এই মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকবে৷
এডিকে/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)