তিব্বতে চীনের জলবিদ্যুৎ বাঁধ, উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ও ভারত
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪তিব্বতের ইয়ারলুং জাংবো নদীর নিম্নভাগে বাঁধটি নির্মাণ করে বছরে তিনশো বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘন্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনের আশা করছে চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্প৷
চীনের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত থ্রি জর্জেস বাঁধের উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে নতুন বাঁধটি থেকে৷ থ্রি জর্জেস বাঁধ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ হিসেবে বিবেচিত৷
নতুন এই প্রকল্প চীনের কার্বন শিখর ও কার্বন নিরপেক্ষতা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি প্রকৌশলের মতো সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতকে আরো সমৃদ্ধ করবে এবং তিব্বতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা সিনহুয়া৷
ইয়ারলুং জাংবো নদীর একাংশে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে পানিপ্রবাহে ২০০০ মিটারের মতো পতন ঘটে যা জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের এক বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করছে৷ তবে এক্ষেত্রে প্রকৌশলগত অন্যন্য চ্যালেঞ্জও রয়েছে৷
নতুন বাঁধটি নির্মাণে থ্রি জর্জেস বাঁধের চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে৷ এই ব্যয়ের মধ্যে প্রায় পনের লাখ মানুষকে অন্যত্র পুনর্বাসনের খরচও রয়েছে৷ থ্রি জর্জেস বাঁধ নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩৪.৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷
চীনা কর্তৃপক্ষ অবশ্য তিব্বত প্রকল্পটির কারণে ঠিক কত সংখ্যক মানুষকে অন্যত্র সরে যেতে হবে এবং মালভূমিটির অন্যতম সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্রময় বাস্তুসংস্থানে তার প্রভাব কী হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানায়নি৷
তবে তারা জানিয়েছে, চীনের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভাবনার এক তৃতীয়াংশের বেশি পূরণে সক্ষম এই বাঁধের কারণে পরিবেশ এবং নিম্নভাগে পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না৷
বাংলাদেশ এবং ভারত অবশ্য তাসত্ত্বেও বাঁধটি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এই প্রকল্পের কারণে শুধু স্থানীয় বাস্তুসংস্থানেই পরিবর্তন নয়, নদীর নিম্নভাগের পানিপ্রবাহ ও গতিপথেও পরিবর্তন আসবে৷
ইয়ারলুং জাংবো নদীটি তিব্বতের পর ব্রহ্মপুত্র নদ নামে ভারতের অরুণাচল ও আসাম হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছে৷ চীন ইতোমধ্যে নদীটির অন্য অংশে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করছে৷ ভবিষ্যতে এধরনের প্রকল্প আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে দেশটি৷
এআই/এসিবি (রয়টার্স)