নিউ কালেডোনিয়ায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করছে ফ্রান্স
২৭ মে ২০২৪ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়৷ বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটার পর থেকে নিউ কালেডোনিয়ায় আর জরুরি অবস্থা থাকবে না৷
নিউ কালেডোনিয়ায় যখন ভোর পাঁচটা, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তখন সন্ধ্যা ছয়টা৷
দুই লাখ ৭০ হাজার অধিবাসীর নিউ কালেডোনিয়া ১৮৫৩ সাল থেকে ফ্রান্সের শাসনাধীন৷ তবে অস্ট্রেলিয়ার নিকটবর্তী প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জটির কানাক আদিবাসীদের অনেকেই আর ফ্রান্সের শাসনে থাকতে চায় না৷ তারা চায় স্বায়ত্তশাসন বা পূর্ণ স্বাধীনতা৷সম্প্রতি এফএলএনকে্এস দল সেই দাবি পূরণে আন্দোলনও শুরু করেছে৷
অন্যদিকে ফ্রান্স সরকার চায় সংবিধান-নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক শাসন৷ সেই লক্ষ্যে আদিবাসী নয়, অথচ দীর্ঘদিন ধরে নিউ কালেডোনিয়ায় বসবাস করছেন এমন বাসিন্দাদেরও স্থানীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার দেয়ার পরিকল্পনা করে মাক্রোঁ সরকার৷ কিন্তু আদিবাসী অধ্যুষিত ভূখণ্ডের ৪০ হাজার মানুষের ভোটাধিকারের বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনার দিন থেকেই নিউ কালেডোনিয়ায় শুরু হয় বিক্ষোভ৷ বিক্ষুব্ধদের একাংশ পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় বলেও অভিযোগ৷উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে সান্ধ্য আইন জারি করা হয়৷বিক্ষোভ তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি৷ গত ১৫ মে তাই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়৷তা কার্যকর করতে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷ প্রয়োজনে গ্রেপ্তার বা গৃহবন্দি করা, চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা এবং অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতাও দেয়া হয় পুলিশকে৷
তা সত্ত্বেও রাজধানী নোমিয়ার বেশ কিছু এলাকায় বিক্ষোভের আগুন নেভেনি৷ বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে নিউ নিউ কালেডোনিয়ার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর বন্ধ৷ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ২ জুনের আগে সেখানে বিমান চলাচল শুরুর সম্ভাবনা নেই৷
মাক্রোঁর জরুরি সফর
গত বৃহস্পতিবার এক জরুরি সফরে কালেডোনিয়ায় যান এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ সেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ভোটের বিষয়ে জোরপূর্বক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না৷তাই বলে সহিংসতার শেকড় ছড়াতে দেয়াও উচিত হবে না৷''
শনিবার কানাক আদিবাসীদের দল এফএলএনকেএস-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মাক্রোঁ৷ আদিবাসী নেতারা সেখানেও নির্বাচন ব্যবস্থা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জন্য মাক্রোঁ ও তার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান৷ জবাবে মাক্রোঁ জানান, সেক্ষেত্রে তিনি বিষয়টি নিয়ে গণভোট আয়োজনের কথা ভেবে দেখবেন৷
এসিবি/ কেএম (এপি, এএফপি, রয়টার্স)