ভারতে ফিরতে চান অনুপ চেটিয়া
২৩ আগস্ট ২০১৪অনুপ চেটিয়াকে এখন ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার কাশিমপুর কারাগারে অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে দেখা করেন জে.পি সিং৷ গাজীপুরের সাংবাদিক অপূর্ব রায় ডয়চে ভেলেকে জানান, জে.পি সিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশন অফিসের দোভাষী দীপক দেবনাথও ছিলেন৷ কারা-সুপার মো. মিজানুর রহমানের উপস্থিতিতে অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা৷
জেলার জান্নাতুল ফরহাদ জানান, ‘‘প্রায় এক ঘণ্টা অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন৷ এ সময় কনসুলার অনুপ চেটিয়ার দেশে ফেরার কোনো আগ্রহ আছে কিনা – তা জানতে চান৷ জবাবে অনুপ চেটিয়া দেশে ফেরার সম্মতি প্রকাশ করেন৷''
এর আগে গত বছরের মে মাসে তাঁর দুই সহযোগীকে নিয়ে ভারতে ফিরতে রাজশাহী কারাগারের কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন অনুপ চেটিয়া৷ তারপরই তাঁকে রাজশাহী কারাগার থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়৷
১৯৯৭ সালের ২১শে ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে অনুপ চেটিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং বিদেশি মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে মোট তিনটি মামলা হয়৷ তিনটি মামলায় তাঁকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত৷ ২০০৭ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হলেও, এখনো তিনি কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে আছেন৷
বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ২০০৩ সালের ২৩শে আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন অনুপ চেটিয়া৷ এ কারণে তাঁকে হস্তান্তরে আইনি জটিলতা ও দুই দেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি না থাকার কথাও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়৷ তবে এখন আর এ ধরণের আইনি জটিলতা নেই৷
অনুপ চেটিয়া গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনে তাঁর সঙ্গে আটক তাঁর দুই সহচর লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকে নিয়ে নিজ দেশে ফিরতে চাওয়ার কথা বলেন৷
জানা গেছে, কাশিমপুর কারাগারের ছয় তলাবিশিষ্ট শৈবাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় দুটি পাশাপাশি ভিআইপি সেলে অবস্থান করছেন অনুপ চেটিয়া ও লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামী৷ ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের সেল পাশাপাশি দুই কক্ষ হলেও, ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেটিয়া ও গোস্বামী এক সঙ্গেই দিন কাটান৷ তাঁদের কয়েদির পোশাকও পরতে হয় না৷ দু'জন নানাভাবে সময় কাটান, কখনও গল্প করেন, কখনও তাস খেলেন৷ আর মাঝেমধ্যে একমাত্র চ্যানেল বিটিভি দেখেন৷ কারণ কারাগারে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল দেখার সুযোগ নাই৷