১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ
১৮ এপ্রিল ২০১৪নয় দফা ভোটের পঞ্চম দফায় ১২টি রাজ্যের ১২১টি আসনে ভোট হয় বৃহস্পতিবার৷ ১২টি রাজ্য হলো: হিন্দি বলয়ের বিহার ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড, মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, মনিপুর, ওড়িষা, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু-কাশ্মীর৷ ভোটদাতার সংখ্যা ১৯ কোটি ৭০ লাখ৷ ভোট পড়ে দ্রুত ও চটপট৷ ২০০৯ সালের সংসদীয় নির্বাচনের চেয়ে এবারে ভোটের হার বেশি হয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গে ভোটের হার প্রাথমিক হিসেবে ৭৪ শতাংশের মতো৷ মনিপুরে ৮০ শতাংশ৷ ওড়িষায় ৫৫ শতাংশের মতো৷ উত্তর প্রদেশ ও মধ্য প্রদেশে যথাক্রমে ৫৩ ও ৫২ শতাংশের মতো৷ ভোট পর্ব একেবারে নির্বিঘ্নে হয়েছে বলা যায় না৷ ঝাড়খন্ডে মাওবাদীদের বিস্ফোরণে পাঁচ ব্যক্তি আহত হন, তার মধ্যে চারজন নিরাপত্তা কর্মী৷
নির্বাচনে ‘মোদী-হাওয়া' ভূমিগত বাস্তবতায় কতটা প্রতিফলিত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ যেমন, কর্নাটকে মোদী হাওয়া শুধু শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ, গ্রামাঞ্চলে নয়৷ গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল বিজেপি ধরাশায়ী হয়৷ এবার সংসদীয় নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনে বড় ভূমিকা নিয়েছে সংঘপরিবার অন্তত গোড়ার দিকে৷ ফলে ভোটযুদ্ধের মেরুকরণ উঠে এসেছে পাদপ্রদীপে৷ বিজেপির নির্বাচনি ইশতাহারে পুরানো বিতর্কিত ইস্যুগুলি স্থান পেয়েছে৷ যেমন জম্মু-কাশ্মীরের জন্য সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা রদ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং রাম মন্দির ইস্যু৷ কর্নাটক তাই হবে মোদী হাওয়ার পরীক্ষাভূমি৷ কংগ্রেসের হয়ে মোদী বধে ময়দান তোলপাড় করে চলেছেন গান্ধী পরিবারে তিন মহারথী৷ সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা বাড্রা৷ গলা ফাটিয়ে বলছেন মোদীর ধর্মীয় মেরুকরণকে প্রশ্রয় দেবেন না৷ ভারতের আমজনতা চায় ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী দেশ৷ আর মোদীর রাজনীতি চায় দেশকে ভাগ করতে৷ প্রচার এখন ব্যক্তিমুখী৷ দলীয় নীতি বা মতবাদের চেয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ বড় হয়ে উঠেছে৷
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মোদী৷ আঙুল তুলে বলেছেন রাজীব গান্ধীর জমানায় পঞ্চায়েত থেকে সংসদ সবই ছিল কংগ্রেসের দখলে৷ অথচ তিনিই বলে গেছেন দিল্লি এক টাকা খরচ কলে গরিবদের হাতে পৌঁছাতো মাত্র ১৫ পয়সা৷ তাহলে ৮৫ পয়সা কোথায় যেত? কার পকেটে যেত? প্রশ্ন তোলেন মোদী৷
তবে পঞ্চম দফার ভোটপর্ব যেহেতু সংখ্যার দিক থেকে সর্ব বৃহৎ, তাই এই পর্বে যে দল বেশি আসন পাবে সেই দল দিল্লির মসনদ দখলে অনেকটা এগিয়ে থাকবে বলে মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা৷ দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিতাভ দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, বিজেপি ভালো না কংগ্রেস ভালো – এই প্রশ্ন অবান্তর৷ আসলে মানুষ চায় একটা পরিবর্তন৷ ১০ বছরের কংগ্রেস শাসনের পরীক্ষা হয়ে গেছে৷ এবার বিজেপিকে পরীক্ষা করতে দোষ কী? যেমনটা পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে৷ মমতাকে ক্ষমতায় আনা হয়েছে, তার অর্থ এই নয় যে মমতার সবই ভালো৷ আসলে বামফ্রন্টের আর কিছু দেবার ছিল না৷