পশ্চিমবঙ্গে কেন মাত্র সাতটি আসনে লড়ছেন ওয়েইসি?
৭ এপ্রিল ২০২১প্রথম তিন পর্বের ভোট শেষ। সেখানে ওয়েইসির দল এআইএমআইএমের একজন প্রার্থীও ছিল না। অবশেষে ওয়েইসি প্রার্থী দিলেন মাত্র সাতটি আসনে। রতুয়া, সাগরদিঘি, জলঙ্গি, মালতীপুর, ভরতপুর, ইটাহার ও আসানসোল উত্তর।
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুসলিম প্রধান কেন্দ্রগুলিতে তিনি প্রার্থীা দেননি। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুরের অধিকাংশ আসনেই প্রার্থী দেননি তিনি। বোঝা যাচ্ছে, তার এই লড়াইটা প্রতীকী।
অথচ, বিহারের বিধানসভা ভোটে সাফল্য পেয়ে ওয়েইসি ঘোষণা করেছিলেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গেও পুরো শক্তি দিয়ে লড়বেন। নিজের সংগঠনও তৈরি করেছিলেন। আব্বাস সিদ্দিকির দলের সঙ্গেও জোট করার চেষ্টা করেছিলেন। সেটা সফল হয়নি। আব্বাস সিদ্দিকি বাম ও কংগ্রেসের জোটে ঢুকেছেন। ওয়েইসি এখন মাত্র সাতটি আসনে প্রার্থী দিয়েছেন।
প্রবীণ সাংবাদিক মিলন দত্ত মনে করেন, ওয়েইসি পশ্চিমবঙ্গে জল মাপতে চাইছেন। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস বলছে, এখানে মুসলিম নামধারী কোনো দল ভোটে সাফল্য পায় না। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে বরাবরই ধর্মনিরপেক্ষ। এই অবস্থায় ওয়েইসি অল্প কিছু প্রার্থী দিয়ে পরখ করে দেখতে চান, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা সেই ট্র্যাডিশন থেকে বেরিয়ে তাকে ভোট দেন কি না।'' মিলন মনে করেন, ''পশ্চিমবঙ্গের এই ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে আব্বাস সিদ্দিকিও তার দলের নাম দিয়েছেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। তাকেও দলিত, আদিবাসীদের নিয়ে দল করতে হয়েছে।''
পশ্চিমবঙ্গে দল তৈরির ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়েছেন ওয়েইসি। যাদের নিয়ে দল করছিলেন, তাদের অনেকেই তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। প্রার্থী দিচ্ছেন না বলে কিছুদিন আগে দলের প্রধানও ছেড়ে দিয়েছেন। মিলনের বক্তব্য, সিদ্দিকুল্লার মতো নেতাও নিজের দল করে কিছু করতে পারেননি। পরে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাফল্য পান।
আরেক প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''ওয়েইসি যে খুব একটা আশা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন তা নয়, তবে তার উদ্দেশ্য কিছু আসনে মুসলিম ভোট কেটে তৃণমূল ও বাম জোটের প্রার্থীদের বিপাকে ফেলা। তাতে বিজেপির জয়ের পথ প্রশস্থ হবে।''
ওয়েইসি যে জায়গায় প্রার্থী দিয়েছেন, সেটা কংগ্রেসের শক্ত জমি। ফলে ভোট কাটতে পারলে কংগ্রেস সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে আসানসোলের মতো কেন্দ্রে মুসলিম ভোট কাটতে পারলে তৃণমূলের ক্ষতি হবে। তেলেঙ্গানার বাইরে বিহার, মহারাষ্ট্রে সাফল্য পেয়েছেন ওয়েইসি। বাংলায় পাবেন কি? মিলন, আশিসরা মনে করছেন, এখানে তার সাফল্য পাওয়ার আশা খুবই কম।