পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার হুমকি ট্রাম্পের
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪রোববার ট্রাম্প অ্যারিজোনায় সমর্থকদের কাছে বলেছেন, ''পানামা এই খালে যাতায়াতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজগুলির কাছ থেকে অত্যাধিক অর্থ নিচ্ছে।''
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এই খালকে 'ভুল হাতে' যেতে দেবেন না। তিনি চীনের কাছ থেকে সম্ভাব্য বিপদের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন।
অ্যারিজোনার ইভেন্টের পর তিনি তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্য়ালে অ্যামেরিকা পতাকার একটা ছবি-সহ মন্তব্য পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ''যুক্তরাষ্ট্রের খালে আপনাকে স্বাগত।''
অ্যামেরিকা ফেস্ট-এ ট্রাম্প বলেছেন, ''কেউ কি পানামা খালের কথা শুনেছেন? আমরা এই খালকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছি।"
ট্রাম্পের এই মন্তব্য কোনো মার্কিন নেতার ক্ষেত্রে বিরল, কারণ, তিনি অন্য একটি সার্বভৌম দেশকে তাদের একটা অংশ তুলে দিতে বলছেন। এই মন্তব্যের ফলে এটাও বোঝা যাচ্ছে, ট্রাম্পের আমলে কূটনীতির আমূল পরিবর্তন হতে পারে।
ট্রাম্প বলেছেন, ''পানামা খাল একসময় অ্যামেরিকার হাতে ছিল। কয়েক দশক আগে তা পানামা ও ওই দেশের মানুষের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে বেশ কিছু শর্ত ছিল।''
ট্রাম্পের হুমকি, ''যদি নৈতিক ও আইনগত দিক থেকে এই সিদ্ধান্তের মর্যাদা রাখা না হয়, তাহলে আমরা দাবি করব, পানামা খাল দ্রুত, এবং কোনো প্রশ্ন না তুলে আমাদের দিয়ে দেয়া হোক।''
পানামার প্রতিক্রিয়া
পানামার প্রেসিডেন্ট জোস রাউল মুলিনো একটি রেকর্ড করা বার্তায় বলেছেন, ''পানামার স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না। আর এই খালের নিয়ন্ত্রণ ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে চীনের কোনো প্রভাব নেই।''
তিনি জানিয়েছেন, ''পানামা খালে জাহাজ চলাচলের রেট যে বাড়ানো হয়েছে, তা মর্জিমাফিক নয়। তবে হংকং ভিত্তিক হ্যাচিসন হোল্ডিং বহুদিন ধরে ক্যারিবিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে পানামা খালে ঢোকার মুখে দুইটি বন্দর ম্যানেজ করে।''
মার্কিন নিয়ন্ত্রণে ছিল
অ্যামেরিকা এই খাল কেটেছিল এবং বহু দশক ধরে তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু ১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও পানামা একটি চুক্তিতে সই করে। তার ফলে খাল পানামার নিয়ন্ত্রণে যায়। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তা দুই দেশের যৌথ নিয়ন্ত্রণে ছিল। তারপর তা পুরোপুরি পানামার নিয়ন্ত্রণে আসে।
মুলিনো এক্স-এ লিখেছেন, ''পানামা খাল ও তার আশপাশের এলাকার প্রতিটি ইঞ্চি জমি পানামার।''
ট্রাম্প তার জবাবে বলেছেন, ''সেটা এবার আমরা দেখব।''
এই জলপথ ব্যবহার করে বছরে ১৪ হাজার জাহাজ যাতায়াত করে। মার্কিন গাড়ি ও অন্য বাণিজ্যিক জিনিস আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে এই খালের গুরুত্ব বিশাল।
এটা এখনো স্পষ্ট নয়, ট্রাম্প কী করে এই খালের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান। তিনি যদি এই চেষ্টা করেন,তাহলে তা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী হবে।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এপি)