ফ্রান্সে উগ্র ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের প্রতিবাদ
ফরাসি সংসদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে উগ্র ডানপন্থি ন্যাশনাল ব়্যালির জয়ের প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী৷ তারা নতুন বামপন্থি জোটের উপর আস্থা রাখতে চাচ্ছেন৷
রাজপথে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী
ফ্রান্সে রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচনের আংশিক ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন শহরে উগ্রডানপন্থি ন্যাশনাল ব়্যালির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ৷ প্যারিসের রাস্তায় এই নারী এক ‘ঘৃণাপূর্ণ যুগের’ বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন৷ পপুলিস্ট দলটি নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৩৩ শতাংশের মতো ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছে৷
আতশবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ
বামপন্থি জোট ‘নিউ পপুলার ফ্রন্টের’ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক মানুষ প্যারিসের ‘প্ল্যা দ্যুঁ লা রিপাবলিকে’ জড়ো হন৷ নির্বাচনে ২৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে এই জোট৷ কিছু বিক্ষোভকারী সেখানকার স্মৃতিস্তম্ভে উঠে ব্যানার উড়িয়ে এবং আতশবাতি জ্বালিয়ে উগ্র ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ বামদলের শীর্ষ নেতারাও সেই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন৷
ক্ষমতার লড়াই
ভোটাভুটির প্রথম দফায় ন্যাশনাল ব়্যালি জিতেছে৷ প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি শিবির ২১ শতাংশের কম ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে৷ ইউরোপের দেশটিতে ল্য পেনের ডানপন্থি পপুলিস্টদের বিরুদ্ধে লড়ছে বামপন্থি এবং মধ্যপন্থি দলগুলো৷
‘বিতৃষ্ণা, দুঃখ এবং ভয়’
ন্যাশনাল ব়্যালির জয় দেখে অনেক ফরাসি ভোটার হতাশ হয়েছেন৷ ৩৩ বছর বয়সি নাজিয়া খালদি প্যারিসে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন৷ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আমি বিক্ষোভে অভ্যস্ত নই৷’’ তারপরও তিনি তার ‘বিতৃষ্ণা, দুঃখ এবং ভয়ের’ বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন৷
পরিষ্কার বার্তা
ফ্রান্সের পশ্চিমের শহর ন্যঁতে ডানপন্থিদের উত্থানের প্রতিবাদে এক পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা৷ তাদের হাতে থাকা একটি ব্যানারে লেখা: ‘আমরা ব্যালট বাক্স থেকে যা পাবো না, রাস্তায় তা পাবো৷’ অন্য ব্যানারে লেখা: ‘দিনে পাঁচটি পুলিশ এবং নাৎসি খান’৷
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
ন্যঁৎ শহরে কিছু প্রতিবাদকারী মুখোশ পরা ছিলেন৷ তাদের বিক্ষোভ ভেঙে পড়লে কয়েকজন প্রতিবাদকারী পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হন৷ পুলিশ তাদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে৷
ব্যারিকেড, বোতল এবং আতশবাজি
দ্যিঁজ, লিল এবং মার্সেই শহরেও অনেক প্রতিবাদকারীকে রাজপথে দেখা গেছে৷ স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ফ্রান্সের তৃতীয় বৃহত্তম শহর লিওঁতেও পুলিশ এবং বিক্ষোভাকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করে বিক্ষোভকারীদের রুখতে চেয়েছে৷ আর বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে বোতল এবং আতশবাজি ছুঁড়ে মেরেছে৷
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
আগামী ৭ জুলাই দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন শেষ না হওয়া অবধি ফ্রান্সের জাতীয় সংসদের ৫৭৭টি আসন কীভাবে বিন্যস্ত করা হবে তা জানা যাবে না৷ এই ছবিতে যে প্রতিবাদকারীদের দেখা যাচ্ছে তারা বামপন্থি ‘নিউ পপুলার ফ্রন্টের’ উপর আশা রাখছেন৷ তবে ভোটের ফলাফলের যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে ন্যাশনাল ব়্যালি আবারো জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে৷ তবে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও পেতে পারে৷