জার্মানির ভাবমূর্তি
৫ জুলাই ২০১৩জার্মান বিয়ারের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ রপ্তানির কথা ভাবাই যায় না৷ জার্মানিতে যদি ছয় লিটার বিয়ার তৈরি হয়, তবে তার মাত্র এক লিটার যায় রপ্তানিতে৷ কিন্তু দুগ্ধজাত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রতি দুই লিটার দুধের এক লিটার থেকে তৈরি চিজ, কনডেন্সড মিল্ক, মাখন কিংবা মিল্ক পাউডার যায় বিদেশে৷ কাজেই বড় বড় ডেয়ারিগুলো বিপুল বিনিয়োগ করছে, ছোট ছোট ডেয়ারিগুলি বিশেষ ধরনের পণ্য তৈরি করে রপ্তানি বাজারে তাদের জায়গা করে নিচ্ছে৷
ইউরোপের জন্য চিজ, উত্তর আফ্রিকার জন্য মাখন, এশিয়ার জন্য বেবিফুড – জার্মান ডেয়ারিগুলোর বাজারের কোনো অভাব নেই৷ এমনকি বিশেষভাবে ফোটানো লং লাইফ মিল্কেরও খদ্দের রয়েছে বিদেশে, যেমন চীনে৷ এর একটা কারণ, বিদেশে জার্মান খাদ্যপণ্যের গুণগত উৎকর্ষ সম্পর্কে সুনাম আছে৷ গত বছর একটা বিশেষ জার্মান ব্র্যান্ডের মিল্ক পাউডার এমন রপ্তানি হয়েছিল যে তা জার্মানিতেই পাওয়া যাচ্ছিল না৷
শুধু চীনেই নয়, মধ্যপ্রাচ্য অথবা উত্তর আফ্রিকার অবস্থাপন্ন মধ্যবিত্তরাও বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে পশ্চিমি পণ্যের দিকেই ঝুঁকছেন৷ শিশুর খাদ্যের ক্ষেত্রে সে কথা বিশেষ করে প্রযোজ্য৷ তবে জার্মান চিজ-ও বিপুল পরিমাণে রপ্তানি হয়, এবং সেটা ইটালি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের মতো দেশে৷ সব মিলিয়ে জার্মানির চিজ রপ্তানি বছরে দশ লাখ টনের বেশি৷
জার্মানিতে দুধ আসে খামারচাষিদের কাছ থেকে, যাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে লিটার প্রতি দুধের দামের উপর৷ সে হিসেবটা এতই নড়বড়ে হয়ে এসেছে যে গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে প্রায় বিশ হাজার খামারচাষি গোপালন ছেড়ে দিয়েছেন৷ আপাতত দুধ উৎপন্ন করা খামারচাষিদের সংখ্যা মাত্র ৮১ হাজার, যদিও খামার-প্রতি পশুদের সংখ্যা বেড়েছে, কাজেই দুধের উৎপাদন কমেনি৷
সবশেষে বলা দরকার, জার্মানির বিয়ার ব্রুয়ারিগুলোরও যে খুব দুর্দিন চলেছে, এমন নয়৷ ২০০২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বিদেশে রপ্তানিকৃত বিয়ারের অনুপাত দশ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ শতাংশে৷ এবং সেটা যে কি পরিমাণ, সেটা বোঝাতে গেলে এটুকু বললেই চলবে যে, ২০১২ সালে চীনে যে পরিমাণ জার্মান বিয়ার রপ্তানি হয়েছে, তা দিয়ে সত্তর লক্ষ বিয়ারের কেস ভরা যায়৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ)