ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন বরিস জনসন
২৯ অক্টোবর ২০১৯ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ক্ষমতার রাশ যেন আলগা হয়ে যাচ্ছে৷ তিনি যে কোনো মূল্যে ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করাতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে বাধ্য হয়ে ব্রেক্সিট মুলতুবি রাখার আবেদন করতে হয়েছে৷ সংসদে তিন তিন বার আগাম নির্বাচনের প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন জনসন৷ তিনি যাতে ব্রেক্সিটের প্রশ্নে কোনো রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে না পারেন, বিরোধীরা সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রেক্সিটের মেয়াদ তিন মাস পর্যন্ত পিছিয়ে দেবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ‘ফ্লেক্সটেনশন' নামের সেই ব্যবস্থার আওতায় এই সময়কালে ব্রিটিশ সংসদ ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করলে তার ঠিক পরের মাসের প্রথম দিন ব্রেক্সিট কার্যকর করা যেতে পারে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন৷ এবার ২৭টি ইইউ সদস্য দেশের সরকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সম্মতি জানালে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে৷ মঙ্গলবারই বিষয়টি চূড়ান্ত হবার কথা৷ ইইউ সদস্যদের সরকারগুলির পরিষদের প্রধান ডোনাল্ড টুস্ক এক টুইট বার্তায় সোমবার এই ঘোষণা করেছিলেন৷
সোমবার জনসন আগাম নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়ে সেই লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের চেষ্টা চালাতে চান৷ সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে সেই আইন পাশ হলে ডিসেম্বর মাসে আগাম নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে৷ তবে সংসদে জনসনের সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায়ে বিরোধী পক্ষের কিছু ভোটের প্রয়োজন হবে৷ উল্লেখ্য, বিরোধী স্কটিশ জাতীয় দল ও উদারপন্থিরাও ৯ই ডিসেম্বর নির্বাচনের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ জনসন যাতে সংসদে আবার তড়িঘড়ি করে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের চেষ্টা চালাতে না পারেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেই নির্বাচন চায় এই দুই বিরোধী দল৷
ব্রেক্সিটকে ঘিরে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নেও বিরক্তি বাড়ছে৷ তাই তৃতীয়বার ব্রেক্সিটের মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধে সম্মতির সঙ্গে সঙ্গে ব্রাসেলস কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে৷ যেমন তিন মাসের সময়কালে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না৷ তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যকলাপের ক্ষেত্রে ব্রিটেন কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারবে না৷ ১লা ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রেক্সিট কার্যকর না হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্রিটেনকে ইইউ কমিশনে একজন কমিশনর নিয়োগ করতে হবে৷
তিন মাস পর্যন্ত বাড়তি সময় পেয়ে ব্রিটেনের সরকার ও বিরোধী দলগুলি আগামী নির্বাচনে জনসমর্থন আদায় করতে যে যার পছন্দমতো পদক্ষেপ নিতে চাইছে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবার কোনো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)