ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-এর অন্তর্বাস: নিখুঁত দেহবল্লরী?
১ নভেম্বর ২০১৪ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-এর সর্বাধুনিক ‘ব্রা কলেকশন'-টির নাম রাখা হয়েছে এক কথায় ‘বডি' – বিজ্ঞাপনে সেটাই গিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘দ্য পার্ফেক্ট বডি'-তে৷ সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় চেঞ্জ.অর্গ ঠিকানায় পিটিশন শুরু হয়ে গিয়েছে ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-এর কাছ থেকে ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করে৷ ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-কে ক্ষমা চাইতে হবে এই কারণে যে, তাদের পার্ফেক্ট বডি বিজ্ঞাপন মহিলাদের দেহ এবং মহিলাদের কি চোখে দেখা উচিত, সে' বিষয়ে একটি ‘অসুস্থ ও হানিকর বার্তা' পাঠাচ্ছে৷ টুইটারেও #আইঅ্যামপার্ফেক্ট হ্যাশট্যাগে অনুরূপ ঊষ্মা প্রকাশ পেয়েছে৷
‘বডিশেমিং'
যে তিনজন ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী চেঞ্জ.অর্গ পিটিশনটির আয়োজন করেছেন, তাঁদের বক্তব্য হলো এই যে, ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কমবয়সি মহিলাদের তাদের ফিগার পার্ফেক্ট না হওয়ার দরুণ লজ্জা দিচ্ছে: কথাটা হলো ‘বডিশেমিং'৷ ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-এর সর্বাধুনিক বিজ্ঞাপন অভিযানকে ‘দায়িত্ববিহীন মার্কেটিং' আখ্যা দিয়েছেন ফ্রান্সেস ব্ল্যাক, গাব্রিয়েলা কুনটুরিডেস এবং লরা ফেরিস৷ তাদের যুক্তি, এই বিজ্ঞাপন অভিযান মহিলাদের আত্মমর্যাদার হানি ঘটাচ্ছে; মহিলারা মনে করছেন, তাঁদের দেহ পর্যাপ্ত পরিমাণে আকর্ষণীয় নয়, কেননা সৌন্দর্যের এই সংকীর্ণ সংজ্ঞায় তাদের স্থান নেই৷
ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-এর পোস্টারে যে তিনজন মডেলকে দেখানো হয়েছে, তাদের প্রচুর পরিমাণে ‘এয়ারব্রাশ' করে তবেই ঐ আকৃতিতে আনা হয়েছে, বলে ফ্রান্সেস ব্ল্যাক-এর ধারণা৷ ডয়চে ভেলের সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সেস বলেন, ‘‘পার্ফেক্ট বডি বা নিখুঁত দেহ একটা মরীচিকা, একটা অলীক কল্পনা''৷ ফ্রান্সেস উত্তর ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরিজি সাহিত্য এবং দর্শন নিয়ে পড়াশুনা করেন৷ তাঁর মতে এই ধরনের বিজ্ঞাপন স্ত্রী-পুরুষের সম্পর্কের উপরেও অশুভ প্রভাব ফেলে৷
সৌন্দর্যের সংকীর্ণ সংজ্ঞা
ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট-এর পোস্টারটি পুরুষদের বলে, মহিলাদের তাদের চেহারা অনুযায়ী বিচার করতে, যার ফলে পুরুষদের সুস্থ, স্বাভাবিক নারী-পুরুষ সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষমতার হানি হয়৷ অপরদিকে যে সব মহিলা সৌন্দর্যের এই সংকীর্ণ সংজ্ঞার মধ্যে পড়েন না, তাদের প্রতি পুরুষদের অশ্রদ্ধা জন্মায়৷
নয়ত ২২ বছর বয়সি ফ্রান্সেস-এর মূল আপত্তি হলো ‘দ্য পার্ফেক্ট বডি', এই স্লোগানটি নিয়ে৷ এখানে বিজ্ঞাপনের জগৎ স্ত্রী-পুরুষ কাউকেই রেয়াত করে না – মহিলাদের মতো পুরুষদেরও নিখুঁত দেহসৌষ্ঠবের অধিকারী হবার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়, সেই অলীক দেহসৌষ্ঠবের নানা ছবি দেখিয়ে৷ কাজেই স্ত্রী-পুরুষ দু'পক্ষই ‘নেগেটিভ বডি ইমেজ' বা নিজের দেহ সম্পর্কে খারাপ ধারণায় ভোগেন, যার ফলে তাদের আত্মমর্যাদাবোধ কমে যায়৷