‘মাদার অফ অল বম্বস’
১৪ এপ্রিল ২০১৭অধিকাংশ বোমার মধ্যে তেল এবং অক্সিডাইজার থাকে বিস্ফোরণের জন্য৷ কিন্তু ‘মাদার অফ অল বম্বস', যা এমওএবি নামেও পরিচিত, আলাদা৷ এটি থার্মোবেরিক অস্ত্র যা আসলে বিস্ফোরণের জন্য গন্তব্যের বাতাসে থাকা অক্সিজেন ব্যবহার করতে পারে৷ আর অক্সিডাইজার বহন করতে না হওয়ায় বোমাটি আরো বেশি বিস্ফোরক জ্বালানী উপাদান বহন করতে পারে৷
সাধারণ বোমাগুলো অল্প একটু এলাকার মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটায়৷ কিন্তু এমওএবি'র মতো থার্মোবেরিক বোমাগুলোতে থাকা বিস্ফোরক উপাদান এরোসলের মতো বিস্ফোরণস্থলের বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে যায়, ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে আগুন লেগে যায়৷ দ্য ফাউন্ডেশন অফ ডেমোক্রেসিস-এর বিল রোজিও এই বিষয়ে বলেন, ‘‘এটা আসলে কার্যত বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন শুষে নেয় এবং বাতাসে আগুন জ্বালিয়ে দেয়৷ আর এভাবে এমন সব জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হয় যা সাধারণ বোমার আওতার বাইরে৷''
এই বোমা পরিবহন এবং নিক্ষেপের ধরনও ভিন্ন৷ এটিকে কার্গো বিমানে করে গন্তব্যের কাছাকাছি নিয়ে আকাশে ছেড়ে দেয়া হয়৷ এরপর স্যাটেলাইট গাইডেন্স সিস্টেম এবং পাখার মাধ্যমে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছানো হয়৷ বিশ্বের অন্যতম বড় ‘স্মার্ট' বোমাও এটি৷
এমওএবি সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে ছয় ফুট উঁচুতে বিস্ফোরণ ঘটায়৷ এটি নয় মিটার লম্বা এবং এক মিটার প্রশস্ত৷ এটির ওজন ৯,৫০০ কিলোগ্রাম, যা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে দ্বিগুণ৷ এর আবরণ বেশ পাতলা, যা বিস্ফোরণে সর্বোচ্চ ক্ষতি নিশ্চিত করতে করা হয়েছে৷ বোমাটি বিস্ফোরণ স্থলের দেড়শ' বর্গমিটার এলাকার গাছপালা নিমিষে পরিষ্কার করে ফেলতে সক্ষম৷
মিলিটারি সরঞ্জাম বিষয়ক ওয়েবসাইট ডিগল ডটকমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, একটি এমওএবি তৈরিতে খরচ হয় ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ আর এখন অবধি এ রকম বিশটি বোমা তৈরি করা হয়েছে, যাতে সকুল্যে খরচ হয়েছে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ অবশ্য একটি বোমা তৈরিতেই ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে বলছেন, যা সঠিক নয়৷
রাশিয়ার কাছেও একইরকম বোমা রয়েছে, যেটির নাম সেদেশ দিয়েছে ‘‘ফাদার অফ অল বম্বস''৷ এটি আকারে এমওএবি'র চেয়ে ছোট হলেও চারগুণ বেশি শক্তিশালী৷ তবে কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে সেই বোমার বিস্ফোরণ এখনো ঘটায়নি রাশিয়া৷
এআই/এসিবি (এএফপি, এপি)