মিসরাতায় গাদ্দাফির দেহ, দাফন নিয়ে অনিশ্চয়তা
২২ অক্টোবর ২০১১বৃহস্পতিবার নিজ শহর সির্তে গুলি খেয়ে নিহত হন কর্নেল গাদ্দাফি৷ অবসান হয় তাঁর ৪২ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসনামলের৷ তবে এই দাপুটে শাসকের মৃত্যুর খবর নিয়ে কারো যেন সংশয় না থাকে সেজন্যই ব্যবস্থা নিয়েছে সেখানকার ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল এনটিসি৷ অন্তর্বর্তী সরকারের তেল মন্ত্রী আলি তারহুনি গণমাধ্যমকে এমনটিই জানিয়েছেন শনিবার৷ মিসরাটা শহরের একটি হিমাগারে রাখা হয়েছে গাদ্দাফি এবং মুতাসসিমের দেহ৷ সেখানে তাদের শেষবারের মতো দেখতে ভিড় জমিয়েছে শত শত লিবীয়৷ এমনকি ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিব্রিলও সেখানে তাদের মৃতদেহ দেখতে যান৷ গাদ্দাফি এবং তাঁর ছেলের ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মিসরাতার প্রধান ফরেনসিক চিকিৎসক ওসমান আল জিনতানি৷ তবে সামরিক সূত্র বলছে, তাঁদের আদৌ ময়না তদন্ত করা হবে না৷ ফলে বিষয়টি এখনও বেশ ধোঁয়াটে হয়ে রয়েছে৷
এছাড়া গাদ্দাফির মৃতদেহ কোথায় এবং কখন দাফন করা হবে তা নিয়েও এখনও নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি৷ অবশ্য এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই৷ অনেকে মনে করছেন গাদ্দাফির নিজ শহর সির্তে কিংবা মিসরাতায় তাঁকে কবর দেওয়া হতে পারে৷ তবে শোনা যাচ্ছে, আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের মতো সাগরের পানিতেও ফেলে দেওয়া হতে পারে গাদ্দাফির দেহ৷ তাঁর কবর যেন আবার মাজারে পরিণত করা না হয়, সেজন্যই এমন ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তবে এপর্যন্ত এনটিসি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এতোটুকু জানা গেছে যে, গোপনে সম্পন্ন করা হবে তাঁর দাফন কাজ৷
এদিকে, গাদ্দাফিকে জীবন্ত আটক করার পর কীভাবে তাঁর মৃত্যু হলো তা তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গাদ্দাফির বিধবা স্ত্রী সাফিয়া গাদ্দাফি৷ সিরিয়া ভিত্তিক আল রাই টেলিভিশন সাফিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে এই খবর প্রচার করেছে৷ সেখানে গাদ্দাফিকে মুজাহিদ তথা ধর্মযোদ্ধা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়৷
অন্যদিকে, ৪২ বছরের একনায়কতন্ত্র থেকে মুক্তি পাওয়া লিবিয়ায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে আগামী আট মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিব্রিল৷ জর্ডানে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে বক্তৃতায় তিনি এই ঘোষণা দেন৷ এছাড়া এখন দ্রুত লিবিয়ার পথ-ঘাট থেকে অস্ত্র-শস্ত্র সরানো, সেখানে শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তুতির কথা বলেন জিব্রিল৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম