রাজনীতিবিদদের গাছ লাগানোর রীতি
নতুন কিছু শুরু করা কিংবা অতীত কোনো ঘটনার স্মরণে বিশ্বনেতারা গাছের চারা রোপন করে থাকেন৷ ছবিঘরটি এমন কিছু ঘটনা দিয়ে সাজানো হয়েছে৷
সম্পর্ককে স্মরণ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ সেখানে হোয়াইট হাউসে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে মিলে একটি গাছের চারা রোপন করেন৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ফ্রান্সের একটি এলাকা থেকে চারাটি নিয়ে এসেছিলেন মাক্রোঁ৷ তিনি বলেছিলেন, এই গাছ ‘‘আমাদের (দুই দেশের) বন্ধন’’-এর কথা মনে করিয়ে দেবে৷ অবশ্য চারাটি এখন ‘কোয়ারেনটিন’ অবস্থায় আছে৷
শান্তির সূচনা?
কোরীয় যুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ার প্রথম নেতা হিসেবে কিম জং উন ২৭ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে পা রেখেছিলেন৷ সেই সময় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে মিলে একটি চারা রোপন করেন তিনি৷ এর মাধ্যমে একটি নতুন অধ্যায় শুরুর আশা করেন তাঁরা৷
ম্যার্কেলের প্রিয়
১৯৯৫ সালে সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর হেলমুট কোল সরকারের সবচেয়ে তরুণ মন্ত্রী ছিলেন বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ঐ বছর জার্মানির ম্যাকলেনবুর্গ অঞ্চলের এক হাজার বছর প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে এক হাজার গাছ লাগানোর কর্মসূচি উদ্বোধন করেছিলেন ম্যার্কেল৷ প্রথম গাছটি তিনিই লাগিয়েছিলেন৷ এরপর থেকে বিভিন্ন সময় তাঁকে চারা রোপন করতে দেখা গেছে৷
জি-৮ সম্মেলন
২০০৮ সালে জাপানের সম্মেলন চলার সময় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়াসু ফুকুদার সঙ্গে চারা রোপর করতে দেখা যাচ্ছে৷
পরেরবার অন্যরা ছিলেননা
২০১৬ সালে আবার যখন জাপানে জি-৭ এর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তখন ম্যার্কেল থাকলেও আগের বিশ্বনেতারা ছিলেন না৷ ছবিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও ইটালির প্রধানমন্ত্রী মাটেও রেনজিকে দেখা যাচ্ছে৷
নতুনের শুরু?
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া দখলের অভিযোগে জি-৮ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করে জার্মানি, ক্যানাডা, ফ্রান্স, ইটালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু সেই বছর চীনে অ্যাপেকের সম্মেলনে গিয়ে বেইজিং-এ একটি চারা রোপন করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷ অনেকে একে পুটিনের নতুন পাতা উলটানো বলে মনে করেছে৷
ফল দিতে ব্যর্থ
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর মাত্র একবছর আগে লেবাননের বৈরুটে গিয়ে সৌদি আরবের তৎকালীন রাজা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুলআজিজ আল-সৌদের সঙ্গে চারা রোপন করেছিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ৷ উদ্দেশ্য ছিল অত্র অঞ্চলে উত্তেজনা প্রশমন৷ তবে এখন সিরিয়া যুদ্ধে দামেস্ক আর রিয়াদ একে অপরের বিরোধী গোষ্ঠীকে সমর্থন করছে৷
শান্তির প্রতীক
২০১৪ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজ পোপ ফ্রান্সিসকে স্বাগত জানিয়েছিলেন৷ সে সময় তাঁরা জলপাই গাছের চারা লাগান৷ এই গাছকে শান্তির প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়৷
মানুষকে সম্মান জানানো
১৯৫১ সালে ক্যানাডার ভ্যাঙ্কুভারে গিয়ে সেখানকার পার্কে একটি গাছের চারা রোপন করেছিলেন ব্রিটেনের তৎকালীন রাজকন্যা ও বর্তমান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ৷ পরবর্তী সময়ে তিনি বহু গাছ লাগিয়েছেন৷ এর মাধ্যমে তিনি মানুষ, কোনো স্থান কিংবা ঘটনার প্রতি সম্মান জানান৷