রোববার সন্ধ্যায় শপথ, নেহরুকে ছোঁবেন মোদী
৯ জুন ২০২৪রোববার সন্ধ্যায় জওহরলাল নেহরুকে ছুঁয়ে ফেলবেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। নেহরু পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। মোদীও তাই হতে চলেছেন।
তবে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি এবার পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এনডিএ-র শরিক দলগুলি মিলিয়ে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পার করে গিয়েছে। তাই এবার শরিদ দলগুলিও মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব পাচ্ছে। মোদী ও বিজেপি মন্ত্রীদের সঙ্গে টিডিপি, জেডিইউ, জেডিএস, এলজেপি, একনাথ শিন্ডের শিবসেনার মতো শরিক দলের মন্ত্রীরাও এদিন শপথ নিতে পারেন।
সূত্রের খবর, রোববার সকালে মন্ত্রী হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন রাজনাথ সিং, নীতিন গড়করি, শিবরাজ সিং চৌহান, চিরাগ পাসোয়ান, কুমারস্বামীরা। বাকিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
শরিক দলগুলির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারে সবচেয়ে বেশি মন্ত্রণালয় দাবি করেছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তারপর জেডিইউ। তারা একাধিক পূর্ণমন্ত্রী ও রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ দাবি করেছিলেন। এই দুই দলকে মন্ত্রিসভায় নেয়া হলেও তাদের দাবি মেনে অতজন পূর্ণমন্ত্রী দেয়া হবে বলে বিজেপি নেতারা মনে করছেন না।
চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও অর্থ সম্ভবত বিজেপি-র হাতেই থাকছে। সেইসঙ্গে সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও তথ্যপ্রযুক্তি-সহ অন্য কিছু মন্ত্রণালয় বিজেপি নিজের হাতে রাখতে চায়। স্পিকার পদও তারা শরিক দলকে দিতে চায় না।
বিজেপি সূত্র জানিয়েছে, শরিক নেতাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের দাবি যুক্তিগ্রাহ্য সীমার মধ্যে রাখতে হবে। খুব বেশি উচ্চাকাঙ্খী দাবি মানা হবে না। তবে জিতে আসা প্রায় সব শরিক দলের থেকেই অন্তত একজনকে মন্ত্রী করতে চায় বিজেপি। শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গেও তারা আলোচনা করছে।
সাবেক মন্ত্রী ও প্রয়াত নেতা ইয়ারান নাইডুর ছেলে ৩৪ বছর বয়সি টিডিপি নেতা রামমোহন নাইডু মন্ত্রিসভার সবচেয়ে কম বয়সি মন্ত্রী হতে পারেন।
শনিবার ১১ ঘণ্টা ধরে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা, বিজেপি-র সংগঠন সচিব বি এল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই কে কোন মন্ত্রণালয় পাবেন সেটা ঠিক হয়।
চায়ে পে চর্চা
নরেন্দ্র মোদী এদিন হবু মন্ত্রীদের বেলা সাড়ে এগারোটায় চা-চক্রে ডেকেছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, নীতিন গড়করি, নির্মলা সীতারামন, এস জয়শঙ্কর, ধর্মেন্দ্র প্রধান, মনোহরলাল খাট্টার, রাও ইন্দ্রজিৎ সিং, ভূপেন্দ্র যাদব, কিষান রেড্ডি, কেরালার নেতা সুরেশ গোপী, গিরিরাজ সিং, শিবরাজ সিং চৌহান, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো নেতারা।
শরিক দলের তরফে ছিলেন, লালন সিং, চিরাগ পাসোয়ান, রামমোহন নাইডু, জয়ন্ত চৌধুরী, অনুপ্রিয়া প্যাটেল, কুমারস্বামী, রামদাস আঠাবলে-সহ অনেক নেতা।
চা-চক্রের পর আঠাবলে বার্তাসংস্থা এএনআইকে বলেন, তাকে যে মন্ত্রণলায় দেয়া হবে, তাতেই তিনি খুশি। বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিং-ও বলেছেন, প্রশ্নটা নির্দিষ্ট কোনো মন্ত্রণালয়ের নয়, প্রতিটি মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতরত্ন কর্পুরি ঠাকুরের ছেলে রামনাথ ঠাকুর বলেছেন, ''আমার মতো সামান্য একজনকে মন্ত্রিসভায় রাখার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী ও নীতীশ কুমারের প্রতি কৃতজ্ঞ।''''
হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারও চা-চক্রে ডাক পেয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ''এই চা-চক্রে তাদেরই ডাকা হয়, যাদের প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী করতে চলেছেন। কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকে। আমি সেগুলি শেষ করেছি। আমায় আগামী ২৪ ঘণ্টা দিল্লি ছেড়ে যেতে মানা করা হয়েছে।''
পশ্চিমবঙ্গ থেকে দুইজন?
পশ্চিমবঙ্গ থেকে দুইজন নেতা চা-চক্রে ছিলেন। সুকান্ত মজুমদার ও শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া নেতা শান্তনু ঠাকুর বিদায়ী মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই প্রথম মন্ত্রী হতে পারেন।
শেখ হাসিনা দিল্লিতে
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দিল্লি এসে পৌঁছেছেন। তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। এদিন তিনি সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে দেখা করেন।
এছাড়া নেপালের প্রধানমন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা, মরিশাস ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই, এনডিটিভি)