লকডাউন মানে গরিবের ‘পেট' ডাউন
২৯ জুন ২০২১মন্তব্যটি একজন পাঠকের ডয়চে ভেলের ফেসবুকে৷ লকডাউনে সাধারণ মানুষ নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন আর সেসব কথাই তারা তুলে ধরেছেন৷ যেমন পাঠক হাফিজুর রহমানের কাছে পুরো লকডাউনটাই একটা মহা দুর্ভোগ৷ এদিকে লকডাউন নিয়ে পাঠক ইউসুফের লিখেছেন, "মাঝে মাঝে ভাবতে কষ্ট হয়, এ কেমন স্বাধীন দেশে আমরা বাস করছি, মানুষ আজ জিম্মি হয়ে আছে স্বাধীন নামক শব্দের কাছে পরাধীন হয়ে৷ লকডাউন মানে গরিবের ‘পেট' ডাউন৷”
ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী লিখেছেন, "লকডাউনের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে৷ গণপরিবহন বন্ধ আর কর্মক্ষেত্র খোলা৷ এটা জনসাধারণের জন্য ভোগান্তি ছাড়া কিছুই না৷”
বাংলাদেশের লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে জিহাদুল ইসলামের ছোট্ট উত্তর, " হ য ব র ল৷”
"সরকারের সমন্বয়হীনতা দায়িত্বহীনতা সুস্পষ্ট! মানুষকে জানালেন লকডাউন! গণপরিবহন বন্ধ! অথচ প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে অতিরিক্ত টাকায় মিলছে গাড়ি! এদিকে অফিস আদালত খোলা রাখছেন আর অফিস আদালতে পৌঁছাতে কোন সিস্টেম নাই!
সারা ঢাকা শহরে ফুটপাতের বিশাল একটা অংশ যারা দিন আনে দিন খায় এবং যাদের সাথে কেনাবেচা করে একশ্রেণির গ্রাহক তাদেরকে ও পথে বসিয়েছেন! অথচ লাখ টাকায় নিবন্ধন করা নাইটক্লাব বার হাউজ, বড় বড় রেস্টুরেন্টে খোলা!
আমরা তো কুকুরের জীবন যাপন করি! আমাদেরকে অফিস থেকে বলে দেয় কিভাবে আসবেন সেটা আপনার ব্যাপার! না আসলে বলেন নতুন লোক দেখি, আমার প্রতিষ্ঠান থাকলে লোকের অভাব নাই! গরীবের কান্না কোন ভদ্রলোক দেখেনা, সরকারের তো চোখ আরও কানা৷” লকডাউন নিয়ে এভাবেই তার নিজের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছেন ফেসবুকে পাঠক একে খান৷
আর পাঠক শাহাদুজ্জামান সাজু লকডাউনে ৫০ টাকা ভাড়া ১০০ টাকা দিয়ে অফিসে গেলেন সেটাই জানিয়েছেন৷
আর সেতু চৌধুরী বলছেন, " পেটের ক্ষুধার কাছে করোনাভাইরাসের ভয় কিছুই না! তাই মানুষকে ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছেনা আর সে কারণেই লকডাউনের গুরুত্ব তাদের কাছে তেমন প্রভাব ফেলতে পারছেনা৷”
শহর তো ইট পাথরের, পেটের ক্ষুধা নিয়ে গ্রামে গিয়ে লতা পাতা খেয়ে বাঁচবে তাই সবাই গ্রামে ছুটছে-আয়েশা সিদ্দীকার মন্তব্য৷
পাঠক আহমেদ নুরুদ্দিন শাহী ডয়চে ভেলের সাথে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন এভাবে, " লকডাউন,শাটডাউন যাই বলিনা কেনো এইসব শুরু হওয়ার পর ঢাকা শহর থেকে মানুষ চলে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ভিড় জমায় বিশেষ করে ফেরিঘাটগুলিতে৷
যারা ঢাকা শহরের বাইরে থাকে বা যাদের থাকা খাওয়ার চিন্তা থাকেনা, তারা সচেতনতা বা জ্ঞানের কথা বলি, মজা করি! তবে বাস্তবতা অনেক ভিন্ন! যারা অনেক কষ্টে থাকে বা ভুক্তভোগী তারাই বুঝবে ! গত কোরবানির ঈদের সময় সাতক্ষীরা থেকে আসার সময় আমি নিজেও দেখেছি ফেরিঘাটে কত কষ্ট করে বাড়িতে যেতে হয়৷
ঢাকা শহরে যারা দিনে আনে দিনে খায় তাদের জন্য ঢাকা শহরে এক সপ্তাহ না শুধু একদিন থাকাই অনেক চ্যালেঞ্জ এর বিষয়! মানুষের সামনে যখন অভাব কড়া নাড়ে তখন বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা আর কাজ করেনা! অন্যকে নিয়ে কিছু বলার আগে তাদের বাস্তবতা জানা বোঝার প্রয়োজন মনে করি! ”
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: খালেদ মুহিউদ্দীন