শুধু মাস্ক নয়, সামাজিক দূরত্ব জরুরি: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
২৮ আগস্ট ২০২০বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিন্তিত। কারণ, বিভিন্ন দেশে সাধারণ মানুষ মাস্কপরলেও সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। সংস্থার অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী মারিয়া ফন কারকোভ বলেছেন, ''আমরা দেখতে পাচ্ছি, সাধারণ মানুষ আর সামাজিক দূরত্বের বিধি মানছেন না। আমরা মাস্ক পরছি। কিন্তু করোনাকে ঠেকাতে গেলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। অন্তত ছয় ফুটের দূরত্ব বজায় রাখুন। যদি পারেন তাহলে আরো দূরে থাকুন।''
করোনা ঠেকাতে কী করতে হবে তা এর আগে বহুবার বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কারকোভও জানিয়েছেন, ''শুধু মাস্ক পরলে হবে না, শুধু সামাজিক দূরত্ব রাখলে হবে না, শুধু বারবার হাত ধুলে হবে না। সবকটি বিধি মানতে হবে।''
বেশ কিছু দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। অনেক দেশে মাস্ক পরাও ঠিকমতো হচ্ছে না। এই মাসেই বার্লিনে যে বিশাল বিক্ষোভ হয়েছিল, সেখানে অনেকেই মাস্ক পরেননি। সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখা হয়নি। বিক্ষোভের ক্ষেত্রে তা রাখাও সম্ভব নয়। আবার ভারত, বাংলাদেশের মতো দেশগুলিতে এখন অফিস, দোকান, বাজার সবই খুলে গেছে। বাস চলছে। সেখানে লোকের পক্ষে সামাজিক দূরত্বের বিধি মানা সম্ভবই নয়। ভারতে এ বার মেট্রো শুরু হয়ে যেতে পারে। শহরতলির ট্রেন চালানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। সেখানেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেয়া সামাজিক দূরত্বের বিধি পালন করা সম্ভব হবে না।
এই অবস্থায় করোনা নিয়ে বিভিন্ন দেশ নতুন করে কড়াকড়ি শুরু করেছে। যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে জার্মানিতে আসছেন, তাঁদের ১৪ দিনের জন্য কোয়ারান্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জার্মান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির প্রস্তাব হলো, ওই ১৪ দিন পুলিশ তাঁদের ওপর নজর রাখুক। তাঁরা জার্মানির স্কুলগুলিতেও মাস্ক বাধ্যতামূলক করতে বলেছেন। কারণ, ক্লাসে সামাজিক দূরত্বের বিধি মানা সম্ভব নয়। নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়ার মতো অঞ্চলে ক্লাসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নয়। তবে ক্লাসের বাইরে স্কুল চত্বরে মাস্কপরতেই হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুঁশিয়ারি, ইউরোপে কম বয়সীদের মধ্যে করোনা বাড়ছে। তাঁদের থেকে বয়স্করা করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। ইউরোপে ছুটির মরসুম শুরু হওয়ার পর করোনার সংখ্যাও বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তখন হোটেলগুলিকে অনুরোধ করেছিল, তারা যেন সব ঘর ব্যবহার না করে। কিছু ঘর খালি রাখে। না হলে হোটেলে সামাজিক দূরত্ব মানা যাবে না। বৃহস্পতিবার ইটালিতে সংক্রমণের হার বেড়েছে। কারণ, ইটালির মানুষ অন্য দেশে ছুটি কাটিয়ে ফিরেছেন।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৭ হাজার ২৬৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এত মানুষ এর আগে একদিনে আক্রান্ত হননি। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে একটি উপজাতি গোষ্ঠীর দশজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে প্রশাসন রীতিমতো চিন্তিত। তবে তাঁদের মধ্যে ছয় জন নিভৃতবাসে থেকে করোনা সারাতে পেরেছেন। বাকি চারজন হাসপাতালে।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)