সাত খুনের মামলায় আরো তিন র্যাব সদস্য গ্রেপ্তার
২ ডিসেম্বর ২০১৪গ্রেপ্তার হওয়া র্যাব সদস্যরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ র্যাবের এএসই আবুল কালাম আজাদ ও বজলুর রহমান এবং হাবিলদার মো. নাছিরউদ্দিন৷ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মণ্ডল জানান, সোমবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে বিচারক মনোয়ারা বেগম সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এর আগে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার র্যাব সদস্যদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই তিনজনের নাম এসেছে৷ তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷''
সাত খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭ জন র্যাব সদস্যসহ মোট ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ১০ জন র্যাব সদস্যসহ ১৩ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷
মামুনুর রশিদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা তদন্তের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিচ্ছি৷ সংশ্লিষ্ট সব তথ্য উপাত্তই বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে৷ যাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তাঁদের জবানবন্দির তথ্য যাচাই বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে৷''
মামলার তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য আদালত এরইমধ্যে সময় বেঁধে দিয়েছে৷ আগামী বছরের ২২শে জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে৷ তদন্তকারীদের হাতে এখন দুই মাসেরও কম সময় আছে৷ নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এইচ এম শফিকুল ইসলাম সোমবার এ নির্দেশ দেন৷
এ নিয়ে আদালতে আবেদনকারী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাত মাস পার হলেও আদালতে এখনও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি৷ আবেদনের শুনানিতে আমরা এ বিষয়ে আবেদন জানালে আদালত অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য সময় ২২শে জানুয়ারি নির্ধারণ করে দেন৷''
মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে এখনও দেশে ফিরিয়ে না আনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি৷ সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, ‘‘নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলে অনেক রাঘব বোয়ালের নাম বেরিয়ে আসবে৷ তাই তাঁকে দেশে ফেরত আনছে না সরকার৷''
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘‘এই মামলার তদন্তে কাউকে ছাড় দেয়ার প্রশ্নই ওঠেনা৷ গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি তদন্তে স্বাভাবিক কারণেই সময় লাগছে৷ আশা করি আদালতের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেই তদন্ত শেষ হবে৷''
গত ২৭শে এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়৷ তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁদের লাশ ভেসে ওঠে৷ এরপর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল সলাম অভিযোগ করেন, নূর হোসেনের কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জের র্যাব কর্মকর্তারা ৬ কোটি টাকা ঘুসের বিনিময়ে সাতজনকে হত্যা করেছে৷ পরে আদালতের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ র্যাবের তিন শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হলে জানা যায় র্যাব সদস্যরা কীভাবে সাতজনকে অপহরণ ও হত্যা করেছে৷