সিরিয়াকে চাপে ফেলতে প্রস্তুত আরব লীগ
২৭ নভেম্বর ২০১১আরব লীগের সিদ্ধান্ত কেমন হবে
সিরিয়ার অভ্যন্তরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রশাসন যেভাবে সাধারণ মানুষের ওপর নির্মম দমননীতি চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে আরব লীগ আর চুপ করে বসে থাকতে চায় না৷ রবিবার কায়রোয় আরব লীগের মন্ত্রীদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত তাই স্পষ্টভাবেই হতে চলেছে সিরিয়ার ওপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা৷ যে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে সিরিয়ার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের যাবতীয় সম্পর্ক রদ, সেদেশে বাণিজ্যিক বিমান যাতায়াত বন্ধ করা এবং আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা৷ সিরিয়ার পরিস্থিতিকে আন্তর্জাতিক দিক থেকে সমালোচনা করে তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আরব নেতৃত্বের ঐকমত্যের সিদ্ধান্ত আজ যেকোন সময়েই শোনা যেতে পারে৷
কী বলছে সিরিয়া
সিরিয়া আরব লীগের এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে৷ তাদের মতে, আরব লীগের কোন এক্তিয়ার নেই সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার৷ সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল মুয়াল্লেম ২২ সদস্যবিশিষ্ট আরব লীগকে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছেন, আরব লীগ সিরিয়ায় উদ্ভূত সমস্যাকে আন্তর্জাতিক চেহারা দিতে চাইছে৷ এবং এর নেপথ্যে রয়েছে পাশ্চাত্ত্য শক্তিগুলির প্রভাব৷ সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন তাদের খবরে বলেছে, আরব লীগ সিরিয়ার সাধারণ মানুষকে শাস্তি দিতে উদ্যত৷ কারণ, প্রথাগতভাবে সিরিয়া নিজেকে ইসরায়েলের শত্রু বলে ঘোষণা করে এসেছে৷ এখন দেখা যাচ্ছে, আরব দুনিয়ার অন্য দেশগুলি আসলে পাশ্চাত্ত্যের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে৷
ইরানের বক্তব্য
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাষ্ট্র ইরানের প্রশাসন সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে রবিবার৷ সিরিয়ার ওপরে কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ইরান কখনোই একমত ছিল না অতীতেও৷ তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য, তারা এখনই এই নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়৷ পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আরব বিশ্বে অন্যতম ইসরায়েল বিরোধী দেশ ইরান তাদের পাশে একমাত্র সিরিয়া ছাড়া আর কাউকে পাবেনা যদি আসাদ ক্ষমতায় না থাকেন৷ শিয়াপন্থী আসাদকে ক্ষমতায় বহাল রাখতে ইরান বিভিন্ন আঞ্চলিক তাস ইতিমধ্যেই খেলে রেখেছে৷ তেহরান সূত্রে আগেই হুমকি দেওয়া হয়েছিল, আসাদকে চাপে ফেলতে আন্তর্জাতিক মহল যদি সেনা ব্যবহার করে, সেক্ষেত্রে তারা হিজবুল্লাহ বা হামাসের মত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে আসাদের সমর্থনে ব্যবহার করতেও তৈরি৷ তবে, আরব লীগের সম্পূর্ণ বিরোধিতা দেখার পর ইরান কোনদিকে যায়, সেটাও লক্ষ্যণীয় বিষয়৷ যে কারণে, এই মুহূর্তে তেহরান অপেক্ষা আর পর্যবেক্ষণ নীতিতেই অবস্থান করতে চাইছে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়