সিরিয়া, আল রাস্তান, ট্যাঙ্কবাহিনী, হামলা, শুরু
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১১আল রাস্তানে কেন এই হঠাৎ হামলা
তুরস্কের উত্তর সীমান্তে সিরিয়ার এই শহরটি মূলত হামস প্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনী সম্প্রতি তুরস্ক সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে নিজেদের শক্তি আর প্রভাব দেখানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, আল রাস্তানে রবিবার থেকে ট্যাঙ্কের ওপরে মেশিনগান বসিয়ে সেনা নামানোর একটা লক্ষ্য সেটাই হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাছাড়া গত সাতমাস ধরে চলতে থাকা আসাদ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের একটা প্রধান লক্ষ্য হিসেবে এখন আল রাস্তানকে বেছে নেওয়ার অন্য কারণটি হল, এই সেই শহর এবং এলাকা, যেখানে আসাদ বিরোধীরা সংঘবদ্ধ হয়েছে বিপ্লবের শুরুর থেকেই৷
কী পরিস্থিতি আল রাস্তানের?
আল রাস্তানে রবিবার থেকেই বিশাল ট্যাঙ্কবাহিনী ঢুকে পড়েছে বল জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷ শহরের পূর্ব দিক থেকে আসা এই ট্যাঙ্কবাহিনীতে অন্তত ৬০টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সাঁজোয়া গাড়ি রয়েছে৷ হামস এলাকার আরেকটি শহর, কায়সিরে রবিবার সেনাবাহিনীর হাতে ১২ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ সিরিয়ার অভ্যন্তরের খবরাখবরের সত্যতা নিয়ে যদিও বহু প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে৷ কারণ, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সেখানে সেভাবে প্রবেশাধিকার নেই৷ যদিও, বিবিসি'র এক মহিলা সংবাদিক সোমবার দামেস্কে পৌঁছেছেন৷ লিজি ডুসে নামের সেই সাংবাদিককে দামেস্কের প্রাচীন বাজার থেকে সংবাদ কভার করতে দেখাও গেছে৷
কেমন অভিজ্ঞতা বিবিসি'র?
বিবিসি'র সাংবাদিক লিজি ডুসে জানিয়েছেন, দামেস্কে কেউই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনরকম মন্তব্য করতে রাজি নন৷ বোঝাই যাচ্ছে, এক ধরণের আতঙ্ক কাজ করছে মানুষের মধ্যে৷ তার মধ্যে যাঁরাই মুখ খুলেছেন, তাঁরা সকলেই কিন্তু প্রেসিডেন্ট আসাদের সুশাসনের গুণগান ছাড়া অন্য কোন কথা বলতে রাজি হননি৷ এদিকে হামসে সেনা অগ্রসরণ চলছে বলে সংবাদ মিলেছে সোমবারেও৷ ওই এলাকার বহু গ্রাম ও জনপদে সাধারণ মানুষজন সেনাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে বলে খবর পাওয়া গেছে অসমর্থিত সূত্র থেকে৷ বিবিসি'র সাংবাদিকের রিপোর্টে যেমন জানানো হয়েছে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক এবং সন্নিহিত এলাকায় আসাদের সমর্থনে এগিয়ে আসছে অনেকেই৷ কিন্তু রাজধানীর বাইরে শহরতলী এবং গ্রামাঞ্চলে যে নিষ্ঠুর দমননীতি নিয়েছেন আসাদ, আন্তর্জাতিক মহল তার নিন্দায় এখনও মুখর৷ জাতিসংঘের হিসেবেই এ পর্যন্ত ২৭০০-রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে সিরিয়ায়৷ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করতে দেশের মানুষের ওপর সেনাবাহিনী লেলিয়ে দেওয়ার বীভৎস পন্থা থেকে সরতে রাজি নন আসাদ৷ সবরকমের আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারি তিনি অগ্রাহ্য করে চলেছেন৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ