1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন

সমীর কুমার দে, ঢাকা২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

বৃহস্পতিবার ১১৫টি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ভোট৷ দ্বিতীয় দফায় সহিংসতার পরিমাণ ছিল অনেক বেশি৷ নোয়াখালীতে সহিংসতায় একজনের মৃত্যুও হয়৷ তারপরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন যে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1BHR4
Bangladesch Parlamentswahlen
ছবি: Reuters

সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে কোন দল জয়লাভ করল, তার চেয়েও বড় কথা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে৷ এত কিছুর পরও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কিভাবে বললেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে? টেলিভিশনে, পত্র-পত্রিকায় মানুষ দেখেছে যে নির্বাচনে কী পরিমাণ অরাজকতা হয়েছে৷''

দ্বিতীয় ধাপে গোলযোগের কারণে কয়েকটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত রয়েছে৷ ফল ঘোষিত ১০৯টি উপজেলার ৫১টিতে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন৷ আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন ৪২টিতে৷ এছাড়া জামায়াতের আট জন, জাতীয় পার্টির একজন, বিএনপির দু'জন ও আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী প্রার্থী, নির্দলীয় একজন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) দু'জন এবং ইউপিডিএফ-এর একজন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন৷ এর আগে প্রথম ধাপে ১৯শে ফেব্রুয়ারির ভোটে ৯৭টি উপজেলার মধ্যে বিএনপি ৪৪টি, আওয়ামী লীগ ৩৪টি, জামায়াত ১২টি, জাতীয় পার্টি একটি ও ছয়টি উপজেলায় অন্যান্যরা জয়ী হন৷

আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপির ভালো ফলের ব্যাপারে ড. মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের দেশে একই সরকারকে বারবার ক্ষমতায় দেখতে অভ্যস্ত নয় মানুষ৷ কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি৷ উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিও প্রার্থী দেয়ায় সাধারণ মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন৷ তাই মানুষ বিএনপির পক্ষেই রায় দিয়েছে৷ যদিও উপজেলা নির্বাচন যে পুরোপুরি সাধারণ মানুষের মতামতের প্রতিফলন – তা বলা যাবে না৷ তারপরও সাধারণভাবে ধরে নেয়া যায় যে বিএনপির পক্ষেই অধিকাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে৷''

জামায়াতের প্রার্থীরাও ভালো করছে৷ প্রথম ধাপে ১২টি এবং দ্বিতীয় ধাপে, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ৮টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছ তারা৷ এর কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক কিছুই ‘ফ্যাক্টর' হিসেবে কাজ করে৷ এখন বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, যেখানে জামায়াতের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে সেখানে অন্য দলের প্রার্থীরা কেমন ছিলেন৷ জামায়াতের প্রার্থীরা যদি অন্য দলের প্রার্থীর থেকে অধিক সত্‍ ও যোগ্যতাসম্পন্ন হয়ে থাকে, তাহলে মানুষ তাঁদের ভোট তো দিতেই পারে! আর এ সব উপজেলায় বিএনপির কোনো প্রার্থী ছিল না৷ ফলে জোটের রাজনীতির ফল হিসেবে জামায়াত এ সব উপজেলায় জিতেছে৷''

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন ফল খারাপ করল? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মজুমদার বলেন, ‘‘আগেও দেখা গেছে যে, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী-এমপিরা তাঁদের পোষ্য লোকজনকে অনেক সময় মনোনয়ন দিয়ে থাকেন৷ যাঁদের এলাকায় অত বেশি জনপ্রিয়তা নেই, দলের নেতা-কর্মীরাও তাঁদের ব্যাপারে ভালো ধারণা পোষণ করেন না৷ এছাড়া তৃণমূল নেতাদের কথা শুনে মনোনয়ন দেয়া হয় না৷ ফলে সরকারি দলের প্রার্থীরা জিততে পারছেন না৷ তবে সব উপজেলাতেই এমন হয়েছে – তা কিন্তু নয়৷ যেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভালো ছিল সেখানে তাঁরা জয়লাভ করেছে৷''

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে৷ তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে৷ তারা চর দখলের মতো কেন্দ্র দখল করেছে৷ তবে আওয়ামী লীগের দাবি, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে৷ দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘বহির্বিশ্বে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে৷ কারণ এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য