রবীন্দ্র সংগীতের অনুবাদ
২৯ নভেম্বর ২০১২‘‘দেব আর নেব মেলাব মিলিব'' – বলা সহজ, মেনে চলা কঠিন৷ রবীন্দ্র সংগীত শোনার আনন্দ বিদেশিদের মাঝে ছড়াতে গিয়ে তা বেশ টের পেয়েছিলেন রুমেলা সেনগুপ্ত৷ তখন তিনি চাকরি করতে গিয়েছেন নেদারল্যান্ডসে, ডাচ বন্ধুদের বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তাঁদের কৌতূহল মেটাতেই শুরু করতে হয়েছিল অনুবাদের কাজ৷ পরে http://gitabitan-en.blogspot.com – নামের একটা ব্লগ হয়েছে – এসব ইতিমধ্যে জানা হয়ে গেছে আপনাদের৷ তাঁর বন্ধু আনন্দময়ী মজুমদার যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করতে গিয়ে শুরু করেছিলেন অনুবাদের কাজ এবং দুজন একসঙ্গে বেশি গান আগ্রহীদের জন্য পরিবেশন করবেন এ ভাবনা থেকেই ব্লগের সূত্রপাত – এসবও সবার জানা৷ তবে রুমেলার আরো অনেক কথা আছে যে সব না জানলে এক অর্থে সংগীত জগতের বাইরের দুটি মানুষের রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে বড় একটা কাজে বেশ এগিয়ে যাবার গল্পের অনেকটাই অজানা থেকে যাবে৷ সে সব জানাতেই ডয়চে ভেলে কথা বলেছে তিন বছর ধরে নেদারল্যন্ডস প্রবাসি রুমেলার সঙ্গে৷
তিন বছর খুব কম সময় হলেও রুমেলা আর আনন্দময়ী মিলে এরই মাঝে অনুবাদ করে ফেলেছেন রবীন্দ্রনাথের ৭৬০টি গান৷ এ কাজে পরিবার, সমমনা এবং সংস্কৃতিপ্রমী বন্ধুদের সহায়তাও পাচ্ছেন তাঁরা৷ রুমেলা জানালেন, ৭৬০টি গানের মধ্যে আরো দু'জনের অবদানও আছে৷ আনন্দময়ীর বাবা সুব্রত মজুমদার আর রুমেলার স্বামী অরুনাভ'র অনুবাদ করা কয়েকটা গানও স্থান পেয়েছে http://gitabitan-en.blogspot.com-এ৷
তিন বছর ধরে অনুবাদ করে যাচ্ছেন, আরো অনেক দিন নিশ্চয়ই করবেন, কিন্তু এ কাজের মূল লক্ষ্যটা কি? কাদের জন্য করছেন অনুবাদ? বোদ্ধা না সাধারণ পাঠক, শ্রোতার জন্য? অনুবাদ করা গানগুলো নিয়ে নিকট ভবিষ্যতে কি বিশেষ কিছু করার পরিকল্পনা আছে? রুমেলা জানালেন, মূলত ‘‘সাধারণ পাঠক, বিশেষত এমন অবাঙালি যাঁরা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে জানেন, তাঁর গানও হয়ত ইউটিউবে শুনেছেন, কিন্তু গানের অর্থ বুঝতে পারেন না'' – এমন পাঠক, শ্রোতাদের জন্যই কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা৷
রবীন্দ্রনাথের নোবেল জয়ের শতবর্ষ পূর্তির বছর ২০১৩-তে একটা বই প্রকাশের ইচ্ছে আছে৷ পেশাগত এবং পারিবারিক জীবনের শত ব্যস্ততার পরও এভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন কিন্তু কোনো বিশেষ স্বীকৃতির আশা না করেই৷ সাক্ষাৎকারে এ কথা খুব স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন রুমেলা সেনগুপ্ত৷