৮৫ বছর বয়সেও তিনি অনিন্দ্য সুন্দরী!
কার্মেন ডেল’অরেফিসের বয়স শুধু সংখ্যায় বাড়ে, শরীরে নয়৷ তাই ৮৫ বছর বয়সেও ‘বুড়ি’ হননি, দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন মডেলিং৷ এখনো চোখ ধাঁধানো সুন্দরী৷ ছিলেন সবচেয়ে কম বয়সি মডেলদের একজন, এখন তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সি মডেল৷
সেই মেয়েটি
১৯৪৬ সালের এক সকাল৷ নিউ ইয়র্কের এক রাস্তায় একটা বাস থামলো৷ বাস থেকে নামল এক ১৫ বছর বয়সি কিশোরী৷ তাকে দেখে এক ফটোগ্রাফারের মনে হলো, ‘‘মেয়েটির চেহারায়, দৈহিক গড়নে মডেল হবার সব উপাদান আছে৷’’ সেই মেয়েই কার্মেন ডেল’অরেফিস৷ ইটালিয়ান-হাঙ্গেরিয়ান বাবা-মায়ের সন্তান কার্মেনের এভাবেই মডেলিং দুনিয়ায় পদার্পন৷ ওপরের ছবিটি ১৯৬৫ সালের৷
দারিদ্র্য তাঁকে করেছে সুপারস্টার
কবি নজরুল লিখেছিলেন, ‘হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান৷’ কার্মেনের জীবনেও দারিদ্র্যের কষাঘাত ছিল৷ বাড়িতে টেলিফোন ছিলনা বলে, কাজ দিতে চাইলেও এজেন্সি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতো না৷ অনেক সুযোগ নষ্ট হয়েছে এ কারণে৷ বাবা-মায়ের বাসভাড়া দেয়ার ক্ষমতা ছিল না বলে রোলারস্কেটিং করে কর্মস্থলে যেতেন কার্মেন৷ তখন বয়স মাত্র ১৫৷
১৫ বছরেই প্রচ্ছদকন্যা
ঐ ১৫ বছর বয়সেই ‘ভোগ’-এর মতো বিখ্যাত ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদকন্যা হয়ে যান কার্মেল ডেল’অরেফিস৷ তখন তিনি সবচেয়ে কম বয়সি মডেলদের একজন৷ কার্মেনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখতে ওপরের প্লাস (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
অভিনেত্রী কার্মেন
অভিনয়ও করেছেন কার্মেন ডেল’অরেফিস৷ ১৯৬৬ সালে প্রথম ছবি৷ ছবির নাম ছিল ‘দ্য লাস্ট অফ দ্য সিক্রেট এজেন্টস’৷ তারপর দীর্ঘ ৩০ বছর আর ঐ পথ মাড়াননি৷ তবে ১৯৯৬ সালে আবার রূপালি পর্দা আলোকিত করতে দেখা যায় তাঁকে৷ সেই থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চারটি পূর্ণ দৈর্ঘ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন৷ এর বাইরে ছয়টি টিভি সিরিয়ালেও অভিনয় করেছেন কার্মেন৷
জীবনভর চড়াই-উৎরাই
কৈশোরেই পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে খুব কম বয়সে প্রাচুর্যের মুখও দেখেছিলেন কার্মেন৷ শুরুতে ঘণ্টায় সাড়ে সাত ডলার পারিশ্রমিক দিয়ে যারা ভারতো ‘ঢের হয়েছে’, একসময় মোটা অঙ্কের চেক পাঠিয়েও তারা ধন্য হতেন৷ কিন্তু স্বামীর প্রতারণা নিঃস্ব করেছিল তাঁকে৷খুব দৃঢ়চেতা বলেই সামলে উঠে এখনো মডেলিংয়ে টিকে আছেন কার্মেন৷
ইতিহাসের সাক্ষী
কার্মেনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে, ১৯৩১ সালে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা খুব মনে আছে৷ সেই যুদ্ধের পরও অনেকগুলো বছর গেল৷ ফেলে আসা সময় নিয়ে ভাবলে অ্যামেরিকান মডেলের নিজেকে ‘ইতিহাসের সাক্ষী’ বলে মনে হয়৷ এক সাক্ষাৎকারে তাই কার্মেন বলেছেন, ‘‘আমি জীবনের এমন একটা সময়ে এসে দাঁড়িয়েছি, যখন মনে হচ্ছে যে এ সময়টা একান্তই আমার৷ গোটা একটা ইতিহাসের সাক্ষী আমি৷ দীর্ঘ একটা সময়ের অভিজ্ঞতা আছে আমার ঝুলিতে৷’’
এখনো খবরে
এখনো তাঁকে দেখলে থমকে দাঁড়ায় অনেক তরুণ৷ তাছাড়া এই বয়সে মডেলিং করছেন বলে মিডিয়ার চোখও থাকে তাঁর দিকে৷ পাঁচ বছর আগেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সি মডেলের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি৷ বয়সকে হার মানানো এমন এক তারকার দিকে সবার চোখ থাকাই তো স্বাভাবিক! (কার্মেনের সবচেয়ে বেশি বয়সি মডেল হবার খবর পড়তে ওপরের প্লাস (+) চিহ্নে ক্লিক করুন)
আজীবন কাজ ...
৮৫ বছর বয়সেও মডেলিংয়ে আছেন কার্মেন৷ নিজেকে একেবারেই ‘বুড়ো’ ভাবেন না৷ বরং বয়সের প্রশ্ন তুললেই বলে ওঠেন, ‘‘বুড়ো তো সবাইকেই হতে হবে, মরতেও হবে একদিন৷ কিন্তু ঠিক কীভাবে আমরা বুড়ো হবো, কীভাবে জীবনটা কাটাবো – সেটা তো আমাদেরই হাতে৷ তাই আমি জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই৷’’