আনন্দ থেকে মঙ্গল: শুরু থেকে বর্তমান
বাঙালির সার্বজনীন লোকউৎসব পহেলা বৈশাখের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। ‘তিমির বিনাশের’ বার্তা দিয়ে বরণ করে নেয়া হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩১।
অসাম্প্রদায়িক উৎসবে দূর হোক অন্ধকার
ঈদ শেষে রঙিন বৈশাখ। ২০১৬ সালে ইউনেস্কো’র ঘোষিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখে দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক আয়োজন। চারুকলা অনুষদের আয়োজনে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয় হাজারো মানুষ। তাতে আহ্বান, অন্ধকার দূর করার। সকাল ৯ টা ১৮ মিনিটে চারুকলা থেকে যাত্রা শুরু করে শোভাযাত্রা ঘুরে আসে শাহবাগ, ঢাকা ক্লাব ও শিশু পার্ক।
‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’
শিল্পী এবিএম শফিউল আলমে’র নকশা করা পোস্টারটি এবছর নির্বাচিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা’র পোস্টার হিসেবে। কবি জীবনানন্দ দাশের ‘তিমিরহননের গান’ কবিতা থেকে ‘আমরা তো তিমিরবিনাশী’ লাইনখানি বেছে নিয়ে তিনি নকশাটির প্রতিপাদ্য সাজিয়েছেন। এশিয়াটিক সোসাইটিতে দুই দিনের কর্মশালা শেষে বাছাই করা হয়েছে পোস্টারটি৷
মুখোশের গল্প
চারুকলা অনুষদের পঁচিশতম ব্যাচের আয়োজনে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয় ২১ মার্চ থেকে। বাঘ-সিংহসহ নানা প্রাণীর মুখোশ তৈরির শুরুতে এমনই সাদামাটা ছিল। আর্ট পেপার কেটে তৈরি করা হয় নানা প্রাণীর মুখের আদল। এরপর রঙ তুলিতে রঙিন হয়ে ওঠে মুখোশ৷
দেয়ালজুড়ে লোকজ অরণ্য
বর্ণিল স্কুল ঘরটার দেয়ালে বিন্যস্ত নানা লোকজ মোটিফ। তাতে রিকশা থেকে শুরু করে ফুল, হাতি, সিংহসহ কতকিছু। এক লহমায় হাজির দেশ, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য।
রাজা-রানিতে মিশে থাকা ঐতিহ্য
মঙ্গল শোভাযাত্রার অন্যতম অনুষঙ্গ ‘রাজা-রানি’। এবছর তিন জোড়া ‘রাজা-রানি তৈরি করা হয়েছে। রঙিন এই ‘রাজা-রানি’ তৈরিতে বিশেষ মুন্সিয়ানার প্রয়োজন। শিক্ষার্থীর পাশাপাশি চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাই এই ‘রাজা-রাণী’ তৈরিতে অংশ নেন৷
তৈরি পাখিতে মঙ্গলবার্তা
কাঁচা বাঁশের খাঁচা বদলে গেল পাখিতে। হয়ে উঠলো রঙিন। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেয়া পাঁচ মোটিফের একটি এই পাখি। উচ্চতা প্রায় বিশ ফুট।
তিন যুগ আগে শুরুটা ‘আনন্দ উৎসবে’
সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটির শুরুতে শিরোনাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। পরের বছর ভাষাসৈনিক ইমদাদ হোসেন ও সংগীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হকের পরার্মশে নাম পাল্টে রাখা হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। ছবিটি সিলেটের একটি স্কুল থেকে নেওয়া৷