‘আমরা সবাই ওবামার সাথে'
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫বহু বছর যাবৎ তথাকথিত গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমানো সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের পথে মূল প্রতিবন্ধক ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – এবং সেই সঙ্গে চীন ও ভারত৷ যারা জলবায়ু পরিবর্তনের কথা স্বীকার করতে চান না, তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী লবি ছিল মার্কিন মুলুকে৷ লবিইস্ট-দের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের উপর মানুষের গতিবিধির কোনো প্রভাব নেই, কিংবা স্বল্পই প্রভাব আছে৷
এ বছরের ডিসেম্বর মাসে আবার জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন সংঘটিত হতে চলেছে৷ ওবামা যে জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করার সপক্ষে স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন, তা প্যারিসে ঐকমত্য অর্জনের পথে মাইল-ফলক হবার ক্ষমতা রাখে৷ ওবামা চান, ২০০৫ সালের মাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন ৩২ শতাংশ কমানোর চুক্তি করা হোক৷ যা আমাদের সকলের জীবনকেই প্রভাবিত করবে৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের শত শত চুল্লি আছে, যেগুলোকে বন্ধ করতে হবে৷ ফলে কয়লা খনিগুলির নাভিশ্বাস উঠবে৷ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশেও একই প্রক্রিয়া সূচিত হবে৷ পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে বিপুল ভাবে বিনিয়োগ করা হোক, এই হল ওবামা-র সমাধান৷
এটা একটা সুবিশাল চ্যালেঞ্জ:
– বিভিন্ন শিল্প ইতিমধ্যেই ওবামা প্রশাসনের উপর নারাজ৷
– মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকেই ওবামার নীতির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মানতে রাজি নন৷
– নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে অশ্মীভূত জ্বালানির ঘাটতি মেটানো যাবে না, বলে অনেক মার্কিনির ধারণা৷
– জ্বালানি যে অপরিমিত নয়, তার জন্য যে একটা মূল্য দিতে হবে এবং নিজেদের জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে হবে, এটা উপলব্ধি করা সব মার্কিনির পক্ষে সহজ হবে না৷
কিন্তু ভয় পেলে চলবে না৷ অধিকাংশ শিল্পোন্নত দেশে জীবাশ্মভিত্তিক বা পারমাণবিক জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারি ভরতুকি দেওয়া হয়ে থাকে৷ কাজেই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আরো বেশি এবং বড় করে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন৷
বিশ্বের উষ্ণায়ন ইতিমধ্যেই আবহাওয়া বদলে দিচ্ছে: দাবানল, খরা, অতিবৃষ্টি, দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি ঘটে চলেছে ক্রমবর্ধমান হারে৷ মানবজাতির অস্তিত্বই আজ সংকটে৷ এই অবস্থায় প্যারিস সম্মেলন একটি সুযোগ বৈকি – বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি পরিবেশ রক্ষায় নেতৃত্ব দেয়৷ সেক্ষেত্রে আমরা সবাই ওবামার সাথে৷